সকল মেনু

যশোরের এসএম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি সরকারিকরনের দাবি

Art college,jessoreযশোর প্রতিনিধি : প্রতিষ্ঠার একযুগ পার হয়ে গেলেও জোটেনি সরকারি কোন সহায়তা।  এ অবস্থায় চরম অর্থ কষ্টে ভুগছেন এ কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা বলছেন-একযুগ অপেক্ষার পরেও যখন কোনো আশার আলো দেখা গেল না তাহলে আর হয়তো এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। চারুকলা শিক্ষা-বিস্তারের জন্য দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র বিদ্যাপীটটি অবিলম্বে সরকারিকরণের জোর দাবি জানিয়েছেন যশোরবাসী।
যশোর শহরের উপশহরের উত্তরপ্রান্তে লেক আর সবুজ বেষ্টনীর মাঝে এক মনোরম পরিবেশে গত ২০০২ সালে এক একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় যশোর এসএম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজ। শিক্ষানুরাগী আর শিল্পকলার প্রতি আকৃষ্ট শহরের সৃষ্টিশীল কিছু মানুষের আন্তরিকতায় গড়ে ওঠে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম অবস্থায় টিনের ছাউনি আর ইটের গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত হয় শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর মতো একটি বিল্ডিং। সবার আশা ছিল দেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে যেহেতু চারুকলা শিক্ষার জন্য কোনো আর্ট কলেজ নেই, তাই অল্প দিনেই সরকারি সুদৃষ্টি মিলবে। এ আশায় অনেক শিক্ষক-কর্মচারীও যোগ দেন এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ভর্তি হতে থাকেন শিক্ষার্থীরাও। ভর্তির পর পরীক্ষার ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনেক ভাল। কিন্তু প্রতিষ্ঠার একযুগ পার হয়ে গেলেও তাদের সেই স্বপ্ন আজো পূরণ হয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ শামীম ইকবাল জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ কলেজে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে কলেজটি ফলাফলেও সাফল্য দেখায়। ইতোমধ্যে কলেজটি জাতীয় বিশ্বদ্যিালয়ে অধিভুক্ত হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি স্নাতক কোর্স সম্পন্ন করে ৪টি ব্যাচ বেরিয়েও গেছে। প্রতিবছরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে বোর্ডের প্রথম স্থানসহ শীর্ষ ১০টি স্থান দখল করার নজির রয়েছে বহুবার। তাদের অনেকে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে উপার্জন করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা থাকছেন অর্থকষ্টে। তিনি জানান, বর্তমানে এ কলেজে ১০ জন শিক্ষক, ৫ জন কর্মচারী আর শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীরা অনেকটা বিনা সম্মানিতেই পাঠদান করছেন। কিন্তু এভাবে কতদিন তাদের ধরে রাখা যাবে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের কলেজটি মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত হলেও কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। শিক্ষার মানের দিক থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য চারুকলা কলেজের চেয়ে এসএম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজর অবস্থায় অনেক ভাল। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্তরিকতা এবং সহযোগিতার কারণে এবং শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা বোর্ডের মধ্যে খুব ভাল ফলাফল অর্জন করছে প্রতিবছর। তাই অবিলম্বে কলেজটি সরকারিকরণের জোর দাবি জানান কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ দাবির প্রতি পূর্ন সমর্থন জানিয়েছেন যশোরের বিশিষ্টজনেরা।
যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, এদেশে শিল্প সাহিত্য সাংস্কৃতির চর্চার অন্যতম জেলা যশোর। আর এই যশোরের প্রতিষ্ঠিত এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি জাতীয়করণ করা একান্ত প্রয়োজন। জাতীয়করণ করলে দেশের চারুকলা শিক্ষাবিস্তার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম বলেন,  চারুকলা শিক্ষার জন্য দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি সরকারি করার জন্য জোর দাবি জানান।
যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক একরাম-উদ-দ্দৌলা বলেন বিশ্ববিখ্যাত ও বৃহত্তর যশোরবাসীর অহংকার চিত্র শিল্পী এস এম সুলতান’র নামে যশোরে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি সরকারিকরণের বিষয়টি সময়ের দাবী মাত্র। যশোরের মানুষের প্রানের দাবীটির প্রতি সন্মান দেখানো রাষ্ঠ্রেরদায়িত্ব।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি ও কলেজের দাতা সদস্য জাহিদ হাসান টুকুন অবিলম্বে এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি সরকারি করণের দাবি জানান। প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান ঐতিহ্যবাহী যশোরে প্রতিষ্ঠিত এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি সরকারি করণের দাবি জানান। যশোরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজের নির্বাহী কমিটির সদস্য এএসএম হুমায়ন কবির কবু কলেজটি সরকারিকরণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে দাবি করেন।
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি নূর ইসলাম সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, বিশ্ববিখ্যাত চিত্র শিল্পী এস এম সুলতান’র নামে প্রতিষ্ঠিত যশোরের এস এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি সরকারিকরণ একান্ত প্রয়োজন।
যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও দৈনিক কল্যাণ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব মুকুল বলেছেন, এক যুগের আগে এস.এম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলেও কোন সরকার এ কলেজটির প্রতি নজর দেয়নি। দেয়নি কোন সহায়তা। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ কলেজটি সরকারি করণের জোর দাবি  জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top