সকল মেনু

মাহমুদুর রহমান মান্না ১০ দিনের রিমান্ডে

আদালতে মান্নাকোর্ট রিপোর্টার : সেনাবাহীনিকে বিপদগামী করিবার উদ্যোগ গ্রহনের মামলায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার সহকারী পরিদর্শক আব্দুল বারিক মান্নাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান এই আদেশ দেন। এ সময় মান্নার পক্ষে জামিন আবেদন করা হলেও বিচারক তা নাকচ করে দেন। এসময় আসামির রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জামিনের আবেদন করেন আসামির আইনজীবীরা।
এ ছাড়া আদালতে মান্না নিজে বলেন, “কনভারসেশনে আমি বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কথা। লাশ ফেলার কথা বলিনি।”
রিমান্ড আবেদনের বিরোধীতা করে মান্নার আইনজীবী মো. আবদুল মান্নান খান, তুহিন হাওলাদার, বেগ মাসুম জাহান, শামসুননাহার লাকি আদালতকে বলেন, আজকের এই মামলা যদি আমাদের পাশের দেশ গুলোতেও হতো তাহলে আদালত পর্যন্ত আসতো না। এরকারন এই মামলার কোন সত্যতা নেই। পৃথিবীর অনেক দেশের বিচার ব্যস্থায় অভিযোগ করার পরে মামলা প্রমান যোগ্য কিনা আদালতে আসার আগে তা যাচ্ইা করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এ রকম ব্যবস্থা নেই তাই আজ আপনার কাছে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করছি। মাননীয় আদালত এই মামলায় আসামির বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগও নেই। এর কারন এই মামলায় সেনাবাহীনিকে বিপদগামী করিবার উদ্যোগ গ্রহনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু মামলার বাদী হয়েছে পুলিশ। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। এমনকি কোন প্রতিবাদ করাও হয়নি। এছাড়া মামলার আসামি দেশের বিশিস্ট ও সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে পলাতক হবেন না। উপযুক্ত স্থানীয় জামিনদার দেয়া হবে এবং আদালতের আদেশ মোতাবেক নিয়মিত হাজিরা প্রদান করিবে।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু ও শাহ অলম তালুকদার বলেন, আসামি মান্না ভাইবারের মাধ্যমে কথা বলে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে একটি নির্বাচিত, গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমানে যে সহিংসতা চলছে, সেটা বাড়ানোর কথা বলেছেন আসামি মান্না। এটা জঘন্য অপরাধ। এ কারনে আসামিকে রিমান্ড নেওয়া প্রয়োজন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আসামি মাহামুদুর রহমান মান্না ও অজ্ঞাতনামা প্রবাসী আসামীগন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারকে উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকারের বিরুদ্ধে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে উস্কে দেওয়া তথা সেনাবাহিনীকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরকার উৎখাতে ব্যবহার করার জন্য কর্ম-পরিকল্পনা উদ্যেগ গ্রহন করে। আসামি মাহমুদুর রহমান মান্না কথোপোকথনের বিষয়টি তাহার নিজের বলে স্বীকার করে। আসামির এই ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দ্বারা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত গনতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার উদ্দেশ্যে আইনানুগ কর্তব্য হইতে বিপদগামী করিবার উদ্যেগ গ্রহন করিয়া শাস্তিযোগ্য আপরাধ করিয়াছে। এরআগে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপের অন্যতম উদ্যোক্তা মান্নার সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির টেলিফোনে কথা বলার অডিও টেপের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশের পর সারা দেশে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। এরইমধ্যে মঙ্গলবার ভোররাতে বনানীতে তার ভাইয়ের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে মান্নাকে তুলে নেওয়া হয় বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও আটকের ২১ ঘণ্টা পর এই রাজনীতিবিদকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। সেখান থেকে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top