সকল মেনু

গোয়েন্দা নজরদারীতে সিএমপি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা

 রোমান শেখ,হটনিউজ২৪বিডি.কম, চট্টগ্রাম: ব্লাকশিপের (কুলাংগা) কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বলে মন্তব্য করে নগর পুলিশের কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল বলেন,  প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টেই কিছু ব্ল্যাকশিপ থাকে। সিএমপিও এর ব্যতিক্রম নয়। কারা তথ্য পাচার করছে আমরা সেটা শনাক্ত করার দ্রুত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে খোদ সিএমপিতে কর্মরত উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের আগ-মূহুর্তেই তাদের কাছে খবর পৌঁছে দিচ্ছে এসব পুলিশ কর্মকর্তারা। এর ফলে নাশকতা প্রতিরোধ অভিযানে সুফল পাচ্ছেনা পুলিশ প্রশাসন। এতে চরম বিপাকে পড়েছে সিএমপি। এসব সদস্যের কাছ থেকে পুলিশের গোপন তথ্য নাশকতাকারীরা পেয়ে যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছেন নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ অবস্থায়  সন্দেহজনক পুলিশ সদস্যদের ওপর বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব তথ্য ফাঁসের সাথে জড়িত। কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল তথ্য ফাঁসের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের যে তথ্যগুলো থাকে সেগুলো হয়তো আমরা ঠিকমত সংরক্ষণ করতে পারিনা, হয়তো কোনোভাবে তথ্য চলে যাচ্ছে। তবে, আমরা গোপনীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করছি। গত কয়েকদিন আগে নাশকতার সাথে জড়িত শিবির কর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু অভিযান শুরুর ১৫ মিনিট আগেই শিবির নেতারা সংবাদ কর্মীদের অভিযানের তথ্য জানিয়ে দেয়। শুধু চট্টগ্রাম কলেজ নয়, সাম্প্রতিক সময়ে নাশকতা প্রতিরোধে শিবির অধ্যুষিত বিভিন্ন স্থানে একাধিক অভিযান চালায় পুলিশ। বিশাল বিশাল বহর নিয়ে অভিযান চালানো হলেও নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে কোন সাফল্য পায়নি। এ অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে অভিযানের শুরুতে তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার। নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে এমনও তথ্য আছে, হরতাল-অবরোধের সমর্থনে মিছিলের আয়োজন করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আগে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কখনও থানা থেকে মিছিলে সহযোগিতা করা হয়। এরপর সেই মিছিল থেকে ককটেল হামলা, গাড়ি ভাংচুরসহ নাশকতার ঘটনা ঘটে। আবার মিছিলের আয়োজনের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা কোন একটি নির্দিষ্ট ¯পটের বিষয়ে তথ্য দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট থানা থেকে পুলিশ আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিছিলের ¯পট অন্য থানায় নির্ধারণ করে নিজের দায় সারছেন। সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, সম্প্রতি আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, যাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয় , তাকে আমরা পাইনা। সেই সাথে এগুলো করতে যে অর্থ ব্যয় হয় সেগুলো বৃথা যায়। সার্বিক এসব বিষয় পর্যালোচনা করেই সিএমপি’র শীর্ষ কর্মকর্তারা এখন নিজেদের ভেতরকার বিএনপি-জামায়াতের প্রতি সহানুভূতিশীল কর্মকর্তাদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর সদরঘাট ও ডবলমুরিং থানার ওসি বিএনপি’র ৯১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত শাসনামলে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা বিএনপি সমর্থক হিসেবেই পুলিশ প্রশাসনে পরিচিত। এছাড়া ইপিজেড, পতেঙ্গা ও কর্ণফুলী থানার ওসি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে পরিচিত। নগরীর কমপক্ষে আটটি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছাত্রজীবনে ছাত্রদল অথবা শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এসব কর্মকর্তা বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া অথবা কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায়। নগরীর ১৬ থানার মধ্যে কমপক্ষে ১০টি থানায় কর্মরত সেকেন্ড অফিসারও বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া। এছাড়াও নগর গোয়েন্দা পুলিশ ও নগর পুলিশের বিশেষ শাখা মিলে কমপক্ষে ৬ জন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন যারা বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। সিএমপি পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল জানিয়েছেন, আমরা আমাদের সকল সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে গোপন রাখার চেষ্টা করছি। কেউ যদি আমাদের সিদ্ধান্তে ব্যাঘাত ঘটায়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে বেঈমানি করে, সেটা সহ্য করবনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top