সকল মেনু

খুলনায় ভোজ্যতেল সয়াবিনের সাথে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক জুট ব্যাচিং অয়েল

সয়াবিনখুলনা ব্যুরো : ভোজ্যতেল সয়াবিনের সাথে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক জেবিও (জুট ব্যাচিং অয়েল)। একটি কুচক্রি মহল খুলনার বাজারে সয়াবিনের সাথে জেবিও মিশিয়ে দেদারসে বিক্রি করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না থাকায় সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। পাটকে ঝকঝকে করতে স্থানীয় অয়েল ডিপোগুলো মিল-কলকারখানায় প্রতি লিটার জেবিও বিক্রি করে ৬৭ টাকা ৭০ পয়সায়। সয়াবিনের তেলের ন্যায় দেখতে হওয়ায় এবং এর কোনো স্বাদ না থাকায় কুচক্রি মহল সয়াবিন তেলের সাথে জেবিও মিশ্রণ করছে। পরবর্তীতে সয়াবিন তেলের নামে বাজারে প্রতি লিটার বিক্রি করছে ১১০ টাকা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আমলে আসায় জেবিও’র মূল্য সয়াবিন তেলের বাজার মূল্যের সমান করার পরামর্শ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। গত বছরের শুরুতে মেঘনা পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের খুলনা ডিপো হতে রাজবাড়ি জুট মিলস্ লিঃ, আলতুখান জুট মিলস্ লিঃ, রাজ্জাক জুট ইন্ডাস্ট্রিস লিঃ, প্রইড জুট মিলস লিঃ সহ উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমান জেবিও সরবরাহ করে। এই সময় বিভাগীয় জ্বালানী তেল পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজুর রহমান জেলা প্রশাসক এবং মেঘনা পেট্রোলিয়ামের প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ করেন, এই বিপুল পরিমাণ জেবিও জুট মিলের নামে বরাদ্দ নিয়ে মূলত সয়াবিন মিল মালিকদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক এবং মেঘনা কর্তৃপক্ষ পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। মেঘনা তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করলেও তাৎক্ষণিক ভাবে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আখতার কামাল চৌধুরীকে খুলনার প্রধান পদ থেকে প্রত্যাহার করেন। জেলা প্রশাসকের তদন্ত টিম তদন্ত করে জানতে পারে, উল্লিখিত জুট মিলগুলোর নামে বরাদ্দকৃত জেবিও প্রকৃতপক্ষে কোনো জুট মিলে যায়নি। খুলনার সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ এই অনিয়মের কথা স্বীকার করে জানান, সংশ্লিষ্ট দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার জন্য তদন্ত রিপোর্ট মেঘনার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিদায়ী খুলনার জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ স্বীকার করেন এই জেবিও প্রকৃত পাটের জন্য ব্যবহৃত হয়নি। তিনি মেঘনা পেট্রোলিয়ামের খুলনাস্থ ডিপোর অনিয়মের কথাও স্বীকার করেন। শেখ হাফিজুর রহমান জানান, জেবিও সাধারণত সর্বত্র না পাওয়ার কথা, কিন্তু খালিশপুরের ডিপোর পাশে যে কোন ডিলারের কাছে এই জেবিও পাওয়া যায়। নানা কৌশলে যে কেউ এই জেবিও ডিপো থেকে উত্তোলন করতে পারে। অতিরিক্ত মুনাফার জন্য একটি চক্র ভেজাল প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। খুমেক’র গ্যাসট্রোএন্টারোলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আহাদ জানান, এদেশে বিষয়টি নিয়ে কোনো গবেষণা ইনস্টিটিউট নেই। তবে সুইডেনে জেবিও অয়েল ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে গবেষণায় দেখা গেছে যে, একটি ইঁদুরের দেহে এই জেবিও দিলে ১ মাসের মধ্যে ক্যান্সার, চর্মরোগ ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়। বিজিএমসি সূত্র জানায়, পাটকলগুলোতে পণ্য উৎপাদনের বিভিন্ন মৌলিক উপাদানের একটি জেবিও। পাট নরম করতে এই জেবিও ব্যবহার করা হয়। তবে দেশের পাটকলে বছরে কি পরিমাণ জেবিও ব্যবহৃত হয়, তার কোনো হিসাব তাদের কাছে নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top