সকল মেনু

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

  সাহিত্য ডেস্ক: নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তার লেখনীর মাধ্যমে পাঠকের মন জয় করেছিলেন অল্প সময়ের মধ্যে। পাঠকপ্রিয়তা কতটা তিনি পেয়েছিলেন তা এখনো আঁচ করা যায়। ২০১২ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কথার এ জাদুকর। আজ ১৩ নভেম্বর। প্রয়াত এ কথাসাহিত্যিকের জন্মদিন। হটনিউজ২৪বিডি.কম’র  পক্ষ থেকে গুণী এ মানুষটির জন্য গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেও সফল হয়েছেন। এসব চলচ্চিত্রেরমাধ্যমে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন-যন্ত্রণা, সমস্যা-সংকট, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, স্বপ্নময়তা, হাস্য-কৌতুক প্রভৃতি বিষয় গুলো তিনি তুলে এনেছেন। যা হৃদয়কে অনায়াসেই সিক্ত করে। প্রয়াত এ কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকারের চলচ্চিত্র নিয়েই এ রচনা।

আগুনের পরশমণি  : এ সিনেমা নির্মাণের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে ভিন্নমাত্রা যোগ করেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নির্মিত আগুনের পরমমণি চলচ্চিত্রটি ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায়। এ কথাসাহিত্যিকের ‘আগুনের পরশমণি’ উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত হয় ছবিটি। এটি তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। হুমায়ূনের এ সিনেমাটি আটটি শাখায় জিতে নেয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এতে অভিনয় করেছেন বিপাশা হায়াত, আবুল হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর ডলি জহুর সহ আরো অনেকে।

শ্রাবণ মেঘের দিন : শ্রাবণ মেঘের দিন চলচ্চিত্রটি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত দ্বিতীয় সিনেমা। প্রয়াত এ লেখকের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমাটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়। এ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, মেহের আফরোজ শাওন, মাহফুজ আহমেদ, আনোয়ারা, মুক্তি, গোলাম মোস্তাফা, সালেহ আহমেদ, ডাঃ এজাজ,শামীমা নাজনীন, নাজমুল হুদা বাচ্চু, বিলকিস বারী, রায়না, নীরা, দিহান। এ সিনেমার মোট নয়টি গান রয়েছে। সব কটি গানই খুব জনপ্রিয়তা পায়। শ্রাবণ মেঘের দিন সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু।

দুই দুয়ারী : একজন রহস্য মানবের মন ভালো করার কিছু রহস্যের ঘটনা নিয়ে কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন দুই দুয়ারী চলচ্চিত্রটি। ২০০০ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। এ সিনেমার নাম ভুমিকায় অভিনয় করছেন রিয়াজ। অন্য প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করছেন মেহের আফরোজ শাওন ও মাহফুজ আহমেদ। এ ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন, ডাঃ এজাজ, মাসুদ আলী খান, নাসিমা খান, শবনম পারভীন, আমিরুল হক চৌধুরী, নাসিমা নাজনীন, জাজল ইসলাম, মজিবর রহমান, দীপক কুমার সুর, প্রানেশ চৌধুরী, ডাঃ করিম, ই টি নাসের, শুভ্র।

চন্দ্রকথা : ২০০৩ সালে হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন চন্দ্রকথা চলচ্চিত্রটি। এটি এ কথাসাহিত্যিকের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চতুর্থ চলচ্চিত্র। নুহাশ চলচ্চিত্রের ব্যানারে নির্মিত এ সিনেমার প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস ও মেহের আফরোজ শাওন। এ ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন, আসাদুজ্জামান নূর, আহমেদ রুবেল।

শ্যামল ছায়া : ২০০৪ সালে মুক্তি পায় শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন এ চলচ্চিত্রটি। এ সিনেমার বিশেষত্ব হচ্ছে, সরাসরি যুদ্ধের দৃশ্য না দেখিয়েও এতে যুদ্ধের আবহ ফুটিয়ে তুলেছেন এ নির্মাতা। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন হুমায়ুন ফরীদি ,শাওন , শিমুল , রিয়াজ, স্বাধীন , সৈয়দ আখতার আলী, তানিয়া আহমেদ, আহমেদ রুবেল, এজাজুল ইসলাম,শামীমা নাজনীন, জেসমিন পারভেজ। ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কার এর জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল শ্যামল ছায়া।

নয় নম্বর বিপদ সংকেত : ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে নয় নম্বর বিপদ সংকেত চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় এ সিনেমাটি। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, আসাদুজ্জামান নূর, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রহমত আলী, দিতি, তানিয়া আহমেদ, সোহেল খান, ফারুক আহমেদ।

আমার আছে জল : কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের আমার আছে জল উপন্যাস অবলম্বনে ২০০৮ সালে নির্মাণ করেন আমার আছে জল চলচ্চিত্রটি। এটি হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম চলচ্চিত্র। এ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, ফেরদৌস, মীম, জাহিদ হাসান, মেহের আফরোজ শাওন, পিযুষ বন্দোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, সালেহ আহমেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও ডাক্তার এজাজ আহমেদ।

ঘেটু পুত্র কমলা : প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সর্বশেষ নির্মিত চলচ্চিত্র ঘেটুপুত্র কমলা। ২০১২ সালে মুক্তি পায় এ সিনেমাটি।  ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে নির্মিত এ চলচ্চিত্রটি কাহিনি ও চিত্রনাট্য করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। ২০১০-২০১১ সালের মধ্যে নির্মিত এ সিনেমাটি কর্তন ছাড়াই মুক্তির অনুমোদন দেয় সেন্সরবোর্ড। ঘেটুপুত্র কমলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী মামুন।

এ চলচ্চিত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তির আগেই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন নন্দিত এ নির্মাতা। তবে একমাসের জন্যে দেশে ফিরে পুনরায় নিউ ইয়র্ক যাওয়ার আগে ২০১২ সালে ৩০ মে সিনেমাটি দেখেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এ সময় এ চলচ্চিত্রটি টেলিভিশনে মুক্তি না দিয়ে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের কড়া নির্দেশ দিয়ে যান তিনি।

৮৫তম অস্কার প্রতিযোগিতায় ‘সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগের জন্য বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন পায় ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। এ ছাড়া চলচ্চিত্রটি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, কানাডা ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে আয়োজক কমিটির কাছ থেকে আমন্ত্রণ পায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top