সকল মেনু

নাটোরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩৩

  নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। হতাহতরা সবাই দুই বাসের  যাত্রী।  নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান রাইজিংবিডিকে ৩৩ জন নিহত হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী কেয়া পরিবহণের একটি বাসের সঙ্গে নাটোর থেকে গুরুদাসপুরগামী অথৈ পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আহতদের সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাটোর ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বড়াইগ্রাম মোড়ের অদূরে কেয়া পরিবহণের বাসটি ট্রাককে ওভারটেক করার সময় নাটোর থেকে গুরুদাসপুরগামী অথৈ পরিবহণের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। কেয়া পরিবহণের বাসের পিছনে প্রাইভেটকারে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী বড়াইগ্রামের ব্যবসায়ী মাজেদুল ইসলাম নয়ন বলেন, বিকট শব্দে সংঘর্ষের পর মহাসড়কের দুইপাশের গর্তে সিটকে পড়ে দুটি বাস। দুটি বাসই দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর রাস্তা ও আশপাশে আহত ও নিহতরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে। আহতদের আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধারে ছুটে আসে। খবর পেয়ে নাটোর, লালপুর ও দয়ারামপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা, থানা এবং হাইওয়ের পুলিশ এসে এলাকাবাসীর সহায়তায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। আহতদের নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল, বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বনপাড়ার বেসরকারি আমিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছিল। তবে প্রশাসনের অনুরোধে চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গে আহতদের চিকিৎসায় নেমে পড়েন।

ঘটনার পরপরই নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান, পুলিশ সুপার বাসদেব বণিক ও বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ একরামুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক, আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০), তার মেয়ে জান্নাতী (৫), একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের আলাল উদ্দিন, সংগ্রামপুরের আব্দুর রহমানের স্ত্রী আতিকা বেগম, খোকসা গ্রামের কৃষ্ণপদ সরকার (৫৫), ইন্দ্রাপাড়া গ্রামের জান মোহাম্মদ (৪৮), গুরুদাসপুর উপজেলার সিধুলী গ্রামের এবাদ আলী (৪৫), শরীফ উদ্দিন (৩০), লাবু (৩৫), আলাল (৫৫), সোহরাব হোসেন, আয়নাল হক (৩৫), সতের আলী প্রামণিকের দুই ছেলে রব্বেল আলী (৪৫) ও আতাহার আলী (৫০), বৃচাপিলা গ্রামের বাবুল (৪০), আব্দুল আওয়াল (৩০), তেলটুপি গ্রামের আবু সাইদের মেয়ে মোহনা খাতুন (৫) ও অথৈ পরিবহণের চালক আলম হোসেন (৪০)।

অথৈ পরিবহণের যাত্রীদের অনেকে সিধুলী গ্রামের ডা. ইয়ারুল ও আমিরুল ইসলাম জোড়া খুন মামলায় নাটোর আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগ অথৈর পরিবহণের বাসের যাত্রী।

নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান সন্ধ্যায় বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে ২২টি লাশ উদ্ধার করে বনপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২০ জনের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top