সকল মেনু

শিক্ষার্থী বেড়েছে সরকারি কলেজে, বাড়েনি শিক্ষক

রুহুল আমিন : কক্সবাজার সরকারি কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বাড়তি শিক্ষার্থীদের জন্য গত দুই বছরে বাড়ানো হয়েছে আসন সংখ্যাও। কিন্তু সে অনুযায়ী নিয়োগ হয়নি নতুন শিক্ষক। উল্টো শিক্ষকের যে পদ রয়েছে তা-ই শূন্য রয়ে যাচ্ছে বহু দিন ধরে। শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হচ্ছে বার বার। কিন্তু শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে না কিছুতেই। এদিকে শিক্ষক সংকটের কারণে নিয়মিত ক্লাস নিতে  হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে নতুন করে ৩০০টি আসন সৃষ্টি করা হয়েছে।এর মধ্যে একাদশে ১৫০, দ্বাদশে ১৫০। এ বছরই চালু করা হল ইংরেজি ও ইসলামি ইতিহাসে অর্নাস (সম্মান)। ইংরেজিতে ৫০টি ও ইসলামি ইতিহাসে ৫০টি আসন সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন করে ৪০০টি আসন বেড়েছে।

কিন্তু এ ৪০০ টি আসনের বিপরীতে সৃষ্টি করা হয়নি কোন শিক্ষক পদ। এ কলেজে শিক্ষকের মোট পদ রয়েছে ৬৪টি। কর্মরত রয়েছেন ৪৬ জন। শূন্য রয়েছে ১৮টি পদ।

এর মধ্যে বাংলা বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। ইংরেজি বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। ইসলামি ইতিহাস বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২টি। ইতিহাস বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২টি। দর্শন বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। রসায়ন বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২টি। উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি পদ। সহযোগী অধ্যাপকের সৃষ্ট পদ রয়েছে ১৪টি। তার মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৯ জন। প্রভাষকের পদ রয়েছে ৩০টি। তারমধ্যে কর্মরত রয়েছে ২২ জন। লাইব্রেরিয়ানের এক মাত্র পদটিই শূন্য রয়েছে। প্রদর্শকের পদ রয়েছে ৪টি। সবকটি পদই শূন্য রয়েছে। শরীরচর্চা শিক্ষকের পদ রয়েছে ১টি। এ পদটিও শূন্য রয়েছে।

কক্সবাজার সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, “অনেক সময় কলেজে এসে ক্লাস না করেই ফিরে যেতে হয়। কিংবা ৩টা ক্লাসের জায়গায় একটা করে চলে যেতে হয়। এভাবে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত এসেছি। ক্লাস না হওয়াতে মনের মত রেজাল্ট করতে পারি না।”

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.কে.এম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, “নতুন করে ৪৯ টি শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয় ১০টি পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। এর মধ্যে ৫টি অধ্যাপকের পদ। ৫টি সহকারী অধ্যাপকের পদ। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত কোন চিঠি আজও পাওয়া যায়নি। কলেজে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৩ শ’। ৮ হাজার ৩শ’ শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম চলছে মাত্র ৪৬ জন শিক্ষক দিয়ে।

সরকারি মহিলা কলেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজে দুই বছর আগে বাণিজ্য বিভাগ চালু হয়েছে। এ বিভাগে একাদশ ও দ্বাদশের জন্য আসন সৃষ্টি করা হয়েছে ৪০০ টি। এই ৪০০ টি আসনের জন্য সরকারিভাবে আজ পর্যন্ত কোন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হয়নি। অতিথি শিক্ষক দিয়ে কোনরকমে চলছে পাঠদান।

এ কলেজের মোট শিক্ষকের পদ রয়েছে ২৬ টি। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ১১ টি পদ। বাংলা বিভাগে ৩টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি পদ । ইংরেজি বিভাগে ৩টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২টি। অর্থনীতি বিভাগে ৩টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। ইসলামি ইতিহাস বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। দর্শন বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। ইতিহাস বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। রসায়ন বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। গণিত বিভাগে ২টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১টি। শূন্য রয়েছে উপাধ্যক্ষের ১টি এবং অধ্যাপকের ১টি পদও।

কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী সুলতানা নাসরিন বলেন, “সিলেবাস এত কঠিন যে স্যাররা বুঝিয়ে দিলে ঠিক মত বুঝতে পারি না। ঠিকমত ক্লাসও হচ্ছে না। জানি না পরীক্ষায় কি লিখব।”

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ নূর নবী  বলেন, “শূন্য পদ পূরণের জন্য বারবার চেষ্টা করছি। কিছু কিছু শিক্ষক ক্ষমতার জোরে কিংবা উপর মহলের সাথে যোগসাজস করে নিয়মের তোয়াক্কা না করে অন্য কলেজে বদলি হয়ে যাচ্ছে।”

এ দিকে কলেজগুলোতে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে পাঠদান করতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। এমনটাই জানালেন কর্তব্যরত শিক্ষকরা।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক কম থাকার কারণে নিয়মিত ক্লাস হয় না। তাই আশানূরুপ ভাল ফলাফল করতে পারছেন না তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top