সকল মেনু

জয়পুরহাটে ব্র্যাক ব্যাংকে ডাকাতি: ১কোটি ৯৫ লাখ টাকা লুট

 এসএস মিঠু , জয়পুরহাট : জয়পুরহাট শহরের ব্যস্ততম প্রধান সড়কের শাহজাহান ম্যানসনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংকের ১কোটি ৯৫লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ ডাকাতরা। শুক্রবার রাতের কোন এক সময় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা অত্যন্ত সুকৌশলে ওই ব্যাংকের পেছনে পূর্বদিকের দেওয়াল কেটে পরিকল্পিত ভাবে ভেতরে ঢুকে  বিদুৎ ও সিকিউরিটি লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার একে একে তিনটি দরজা ভেঙে ভোল্টের ১কোটি ৯৫লক্ষাধিক টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কাউকে গ্রেফতার বা লুন্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে পারে নি পুলিশ।তবে এ ব্যাপারে  র‌্যাব  ফারুক হোসেন ও অজিত নামে ওই ব্যাংকের দুই নৈশ  প্রহরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। ব্যাংকের পেছনে একটি ভাড়া বাড়িতে কয়েকজন অপরিচিতি লোক গত ১১সেপ্টেম্বর ভাড়াটে হিসেবে ওঠে। শনিবার এ ডাকাতির ঘটনার থেকে উধাও হয়ে যাওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সন্দেহের তীর এখন তাদের দিকে। শনিবার সকার ১০টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা জানাজানি হবার পর পর  পুলিশ ও র‌্যাব ছুটে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সংবাদ সংগ্র্েরহর জন্য সেখানে ছুটে যান স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা।কিন্ত ব্যাংকের কর্মকর্তারা শাখা ব্যবস্থাপক (ব্রাঞ্চ ম্যানেজার)  না থাকায় এ ডাকাতির ঘটনার ব্যাপারে  কোন তথ্য জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং এমনি কি ছবি তুলতেও বাধা দেন।শনিবার শুধুমাত্র এ ব্যাংকের এসএমই( স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) কার্যক্রম খোলা থাকায় শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন জয়পুরহাটের বাইরে-রাজশাহীতে।ফলে তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও কোন তথ্য মিলে নি।তাই চাঞ্চল্যকর এ ব্যাংক ডাকাতির ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য না পাওয়ায় স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা পড়েন বিপাকে।নিজ নিজ পত্রপত্রিকা,টিভি চ্যানেল ও সংবাদ সংস্থার চাপে  তারা বিভিন্ন সূত্র থেকে সংবাদ সংগ্রহের চেষ্টা করেন।  সকাল থেকে একাধিকবার ব্যাংকে গিয়ে ধর্না দিয়েও স্বত:স্ফুর্ত  ভাবে ব্যাংকের পক্ষ থেকে কাঙ্খিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন নি।  এমনি অবস্থায় জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ এ ঘটনা স্বীকার করে ক্যামেরার সামনে কোন কথা না বললেও ১কোটি ৯৫লাখ পৃথক অংকের টাকা লুট হবার কথা নিশ্চিত করলে প্রকৃত লুট হওয়া টাকা (১কোটি ৯৫লাখ) সম্পর্কে সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্ত  দূর হয়।

দুুপুর আড়াইটার পর রাজশাহী থেকে শাখা ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী চৌধুরী এই ব্যাংকে এসে পৌঁছার কিছুক্ষণ পর পুলিশ সুপার আবু কালাম সিদ্দিক ও পুনরায় র‌্যাব কর্মকর্তরা ব্যাংকে আসেন।বিকাল সোয়া ৪টায় পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যাবার সময় ডাকাতির ব্যাপারে তথ্য জানাতে সংবাদকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে  এবং  জানাতে অনুরোধ জানালে মিডিয়ার সামনে সাদা পোশাকে বক্তব্য (ইন্টারভিউ )দেয়ায় বাধ্য বাধকতা আছে বলে এ ব্যাপারে তিনি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী চৌধুরীকে সাংবাদিকদের ব্রিফিং দিতে বলেন।তার কথা শুনে অবশেষে শাখা ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী চৌধুরী উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের দাঁড়ানো অবস্থায় একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

জানা গেছে, শনিবার ব্র্যাক ব্যাংকের এ শাখার শুধুমাত্র এসএমই কার্যক্রম খোলা থাকার সে কারনে ব্যাংকের সাধারন শাখার ৬জন কর্মর্কতা  ছিলেন অনুপস্থিত। এসএমই শাখার  কাষ্টমার রিলেশন অফিসার হাসানুজ্জামান ও ফিরোজ আল মুজাহিদ (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকে এসে এ ডাকাতির ঘটনাটি প্রথমে দেখতে জানতে পান। সাথে সাথে তারা এসএমই শাখা এবং ব্যাংকের সহকারী ব্যবস্থাপক নাফিজুর রহমানকে ঘটনাটি অবগত করেন। সাথে সাথে  ওই কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে ঘটনাটি পুলিশকে জানালে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএ মান্নান, সহকারি পুলিশ সুপার(সার্কেল) বিমান চন্দ্র কমকার,জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ ,ওসি (ডিবি) শেখ মাহফুুজুর রহমান,এসআই কাইয়ুম হোসেন এবং র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে অধিনায়ক মেজর আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে গেলে তাদের উপস্থিতিতে ভোল্টের দরজা খুললে সেখানে কিছু খুচরা ছোট নোট ছাড়া আর কোন টাকা পাওয়া যায় নি।তখন ব্যাংকের উপস্থিত কর্মকর্তারা প্রাথমিক হিসেব করে  ব্যাংকের বোল্ট থেকে ১কোটি ৯৫ লাখ টাকা লুট হবার কথা  জানান।পরে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ফজলে রাব্বী চৌধুরী এসে হিসেবে করে লুটকৃত টাকার পরিমান সম্পর্কে নিশ্চিত করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top