কামাল মাসুদ, নোয়াখালী: শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেছেন- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিলেই শিক্ষা অর্জন হয় না, রাষ্ট্রের আদর্শেও শিক্ষিত হতে হবে নতুন প্রজন্মকে। তিনি বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসাবে প্রস্তুত করা। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য চাই আধুনিক যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা। নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। সেই সঙ্গে আমরা চাই নতুন প্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোদের জাগরণ। সততা, নিষ্ঠা, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্বশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিপূর্ণ মানুষ তৈরী করাই সরকারের লক্ষ্য। শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন করে সকলের জন্য আধুনিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। সোমবার দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল-নোবিপ্রবি’র প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও নোবিপ্রবির চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদের প্রতিনিধি হিসাবে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবর্তন বক্তা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর অনুপস্থিতির প্রেক্ষিতে তাঁর বক্তৃতা পাঠ করেন -নোবিপ্রবি’র বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: আবুল হোসেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ ও নোবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন নোবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরী। সমাবর্তন অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন নোবিপ্রবির রেজিস্টার প্রফেসর মো. মমিনুল হক। বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদলয়ের ডাক বাংলো থেকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপির নেতৃত্বে সমাবর্তন শোভাযাত্রা বের হয়ে অনুষ্ঠান স্থলে এসে শেষ হয়। পরে জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রী বলেন- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নের শতভাগ এবং অন্যান্য ব্যায়ের নব্বই থেকে পঁচানব্বই ভাগ অর্থ ব্যায় রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, সুনাম ও শিক্ষার গুণগত মান অব্যাহতভাবে উন্নত করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের তাদের দায়বদ্ধতার কথা মনে রাখতে হবে। জাতি এটা প্রত্যাশা করে।তিনি নোবিপ্রবির অবকাঠামো উন্নয়নে শিক্ষা মন্ত্রনালয় বিভিন্ন কাজে ৮৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে বলে উল্লেখ করেন। ডিগ্রিপ্রাপ্ত নবীন স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রী স্নাততকদের উদ্দেশ্যে বলেন- যারা সমাবর্তনে ডিগ্রি পেলেন তাঁরা বর্তমান সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর লক্ষ্য পূরণে তথ্য প্রযুক্তির সমন্বয়ে একটি অর্থবহ প্রায়াগিতক ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রবর্তনে ভূমিকা রাখবেন বলে আশাকরি। আপনাদের অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এক নতুন বিপ্লব সাধনে সক্ষম হবে। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে নোবিপ্রবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসটিই), ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স (এফআইএমএস), ফার্মেসী এবং এপ্লায়েড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের ৫৯৭ জনকে স্নাতক ও ১১৫জনকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এরমধ্যে ১১জন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। যাদের মধ্যে ৮জন চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক এবং ৩জন ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।