সকল মেনু

বঙ্গবন্ধু অর্থনীতিবিদদের চোখে

 অর্থনৈতিক ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অর্থনৈতিক নীতি ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলা। কিন্তু তাকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিনের জন্য স্থবির হয়ে যায়। দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতির পিতার অর্থনৈতিক কার্মকাণ্ড বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছেন। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।  সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পাকিস্তানি ধাঁচের ব্যাপক বৈষম্যভিত্তিক অর্থনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডকে বিভিন্ন নির্দেশনায় পরিচালনা করা হয়।’ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অর্থনৈতিক মুক্তির প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে। বিশেষ করে, কৃষকসহ সাধারণ মানুষের সমৃদ্ধি অর্জনের আশা ভেঙে যায়।’ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের পরিকল্পনা সেলে দায়িত্ব পালনকারী খলীকুজ্জমান বলেন, ‘সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক নীতিতে কৃষিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল, উল্লেখ করে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৯৭২ সালে শস্য বহুমুখীকরণ কর্মসূচি চালুর ফলে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপক উন্নতি হয়। ওই সময় প্রবৃদ্ধিতে কৃষির অবদান ছিল ৫৩ শতাংশ।’

বঙ্গবন্ধু কৃষকদের উৎপাদনশীলতা ও মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছেন বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ও বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

জানা যায় যে, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ২২ লাখ কৃষককে সার, বীজ ও সেচের উপকরণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়। ৩৬ লাখ একর জমি চাষের আওতায় আনা হয়। এতে খাদ্য ঘাটতি হ্রাস পায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জানতেন যে, সমাজের বৃহৎ অংশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে থাকলে এবং তাদের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছাতে না পারলে প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না। একই সঙ্গে তিনি (বঙ্গবন্ধু) বিদেশি সাহায্য ও মঞ্জুরি-নির্ভরতাও কমিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। এ লক্ষ্য অর্জনে তিনি পুনর্গঠন-প্রক্রিয়ায় যথাসম্ভব অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।’

কৃষি ছাড়াও বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ক্ষুদ্র ব্যবসা বেসরকারি খাতে স্থানান্তর করে ব্যবসা-বাণিজ্য উদারীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। তিনি পর্যায়ক্রমে মাঝারি ব্যবসা বেসরকারি খাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top