সকল মেনু

জনযুদ্ধ আতঙ্কে ২০ ব্যাংক কর্মকর্তা

 বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের দুই এজিএমসহ ২০ কর্মকর্তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি এমএল-জনযুদ্ধ। সংগঠনের শীর্ষ নেতার পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে ওই চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনার পর জেলার অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যেও চরমপন্থি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যাংক দুটির কর্মকর্তারা মঙ্গলবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ জন্য আতঙ্ক কাটাতে মঙ্গলবার থেকে বাগেরহাটের ব্যাংকগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাগেরহাট সোনালী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশুতোষ মণ্ডল জানান, সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত তার অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ও জেলার ১৭ শাখার ম্যানেজারের কাছে চরমপন্থি জনযুদ্ধের দুই শীর্ষ নেতা পরিচয় দিয়ে জনৈক শিকদার মহিউদ্দিন ও বিপ্লব মোবাইল ফোনে ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ব্যাংক কর্মকর্তা ও তাদের সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সোনালী ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করা হয়েছে তারা হলেন, আঞ্চলিক অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার স্বপন গুহ, বাগেরহাট শাখার ম্যানেজার শেখ মুজিবুর রহমান, বাগেরহাট কোর্ট শাখার ম্যানেজার এইচ এম রনী, বাগেরহাট বাজার শাখার ম্যানেজার অর্পণা মণ্ডল, ফকিরহাটের ম্যানেজার দেবব্রত বিশ্বাস, চিতলমারীর মো. আব্দুর রব, কচুয়ার মো. হাবিবুল্লাহ খাঁন, মোড়েলগঞ্জের শংকর কুমার রায়, শরনখোলার রায়েন্দার খাঁন মো. ওমর আলী, রামপালের দেবদাস ব্যানাজী, মংলা পোর্টের কৃষ্ণ কান্ত বৈরাগী, মংলা শহরের আহসান আলী, রামপালের গৌরম্ভার শাখার মো. ফয়সাল শেখ ও রামপালের গিলাতলা শাখার মো. হুমায়ুন কবির।

একইভাবে অগ্রণী ব্যাংকের বাগেরহাট আঞ্চলিক অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, সোমবার দুপুরে ব্যাংকের মোবাইল ফোনে তাকেসহ তার ৪ শাখা ম্যানেজারকে চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিষ্ট পার্টির (এমএল- জনযুদ্ধ) দুই শীর্ষ নেতা শিকদার মহিউদ্দিন ও বিপ্লব নাম পরিচয় দিয়ে অনুরূপ চাঁদা দাবি করা হয়। তার ব্যাংকে যে চারজনের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে তারা হলেন- কচুয়ার গোয়ালমাঠ শাখার এসপিও মলয় কিশোর বিষ্ণু, মোড়েলগঞ্জের পোলেরহাট শাখার এসপিও দিপঙ্কর কুমার মন্ডল, বাগেরহাট শহরের মুনিগঞ্জ শাখার এসপিও দিপক কুমার কুন্ড এবং সদরের যাত্রাপুর শাখার এসপিও মানস কুমার পাল।

এদের কাছে দুটি বাংলা লিংকের নম্বর ০১৯৫৭৫০৩৯০৪ ও ০১৯৫৬০১৮১৫৬ থেকে সোমবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে ফোন করে ১ লাখ করে টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। বলা হয়, ওই চরমপন্থী সংগঠনের কিছু সদস্য বিজিবির সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য বিপুল অংকের টাকা প্রয়োজন। তাই চাঁদা দিতে হবে। না হলে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে।

ওই ব্যাংক কর্মকর্তা আরো জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আবার থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে। ব্যাংকের নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা জানান, দুর্বৃত্তদের মোবাইলের সূত্র ধরে তাদের চিহ্নিত করাসহ আটকের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে। এ ছাড়া ঘটনার পরপরই ব্যাংক পাড়ার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top