ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও বরেন্দ্র এলাকার বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল, হরিপুর সীমান্তবর্তী উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৭০ হেক্টর পতিত জমিতে মুগডাল চাষে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে অনাবাদি পতিত মাটিতে খরা মৌসুমে গভীর নলকুপসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সেচ দিয়ে অল্প খরচে গম ফসলের চাষাবাদ করে আসছে। বিগত দিনে চাষিরা অধিক লাভের আশায় আমন ধান কাটার পর ওই জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করে আসছিল। পর পর কয়েক বছর ধরে আবহাওয়াজনিত কারণে তরমুজের ফলন বিপর্যয় হওয়ায় সীমান্তবর্তী উপজেলার কৃষক অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষিরা তরমুজ চাষ বাদ দিয়ে অল্প খরচে গম চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েন। ফলে এ সব উপজেলায় ব্যাপক হারে গমের চাষাবাদ শুরু হয়। গম কেটে নেওয়ার পর ওই জমিগুলো প্রায় ৩-৪ মাস ধরে পতিত থাকে। বিপুল পরিমাণের এ পতিত জমি হতে কৃষকরা কিভাবে অল্প সময়ে আবার ফসল উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন এমন সময় উপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেন এলাকার কৃষক। সীমান্ত এলাকার পতিত জমিগুলোতে মুগডাল চাষাবাদ করার লক্ষে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে উন্নত জাতের বিণা মুগ-৮ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে বারি মুগ-৬ জাতের মুগডালের বীজ সংগ্রহ করেন। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার স্কুলেরহাট এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম, মোকলেছুর রহমান ও লৎফর রহমান জানান, গম কেটে তোলার পর ওই জমিগুলো পতিত পড়ে থাকে । এ অবস্থায় এবার কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা বীজ বোপণ করে মুগডাল চাষাবাদ করে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। অনুকূল আবহাওয়া আর ভালো বীজ পাওয়ায় এবার হেক্টরে ১.২ মেট্রিক টন ফলন হয়েছে। তথ্য মতে, এবার শুধু ঠাকুরগাঁওয়ে ৭০ হেক্টর জমি থেকে এবার ৮৪ মেট্রিক টন মুগডাল উৎপাদন হয়েছে। এর বাজার দর ১৬ কোটি টাকা। বর্তমান আষাঢ় মাস আমন ধান চাষাবাদের জন্য জমি তৈরির উপযুক্ত সময় এখন তাই জেলার মুগডাল চাষিরা জমি থেকে মুগডাল ফসল সংগ্রহে খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কমল কুমার সরকার জানান, এ বছর উৎপাদিত মুগডাল বীজ হিসেবে কৃষক পর্যায়ে সংরক্ষণ করা হবে। আগামী বছর তা বিনা মূল্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করে মুগডাল চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।