সকল মেনু

সর্দি-জ্বর ঘরে ঘরে

 আলীফ মিয়া : কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগ ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও নানা ধরনের ভাইরাসজনিত ব্যাধি নিয়ে আসছেন নানা বয়সী মানুষ। তবে এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক মানুষ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভুগতে হচ্ছে ন্যূনতম এক সপ্তাহ। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে।

সর্দি জ্বরের কারণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময়টায় যাদের জ্বর ও সর্দি-কাশি হচ্ছে তাদের মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই হচ্ছে। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা এবং এক ঘরে অনেক লোক গাদাগাদি করে বসবাস করলেও জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কম রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন লোকদের হঠাৎ জ্বরের ঝুঁকি বেশি।
এ ছাড়া অনেকে গরমে খুব ঘামেন আর সেই ঘাম গায়েই শুকিয়ে যায় একসময়। তা থেকে অনেকের ঠাণ্ডা লাগে। এই ঠাণ্ডা থেকেই আবার সর্দি বা ভাইরাসজনিত জ্বর হয়ে থাকে, যা সাধারণত এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাতাসে  আর্দ্রতা বেশি। গরমের পর হঠাৎ এই আর্দ্র আবহাওয়া ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বংশ বিস্তারে সহায়ক। ফলে রোগব্যাধি বেড়েছে। এ সময় তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম চলছে। নানা ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সঙ্গে দেখা দিচ্ছে সর্দি ও কাশি। জ্বর নিরাময়ে পরামর্শ দিয়ে বলেন, শরীরের তাপমাত্রা ১০১-১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। মাথাব্যথা হতে পারে। শরীর ভিজা কাপড় দিয়ে বারবার মুছে দিতে হবে। মাথায় পানি দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, জ্বরে আক্রান্ত হলে কিছু ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। জ্বর হলে, অন্যদের সঙ্গে বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লেষ্মা একদম ফেলা যাবে না। এতে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে। স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশে যেখানে আলোবাতাস বেশি আসে এমন কক্ষে থাকতে হবে জ্বরের সময়। রোগীকে প্যারাসিটেমল সেবন করানো যেতে পারে। তবে কিছুতেই অ্যান্টিবায়োটিক নয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আবহাওয়া বদলের কারণে জ্বর ও সর্দি-কাশি হওয়াটা স্বাভাবিক। বিশেষ করে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। কাশি হলে দুয়েক দিন হালকা গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। নাক-গলা বন্ধ হয়ে গেলে গড়গড়ার সঙ্গে নাক দিয়ে বাষ্প নেওয়া যেতে পারে। তাতেও কাজ না হলে অবশ্যই রোগীর বুক ও গলা পরীক্ষা করাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সর্দি হলে নাক পরিষ্কার রাখতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়া এবং নাক দিয়ে পড়া পানি মুছতে পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে। সর্দি-জ্বর ছোঁয়াচে বলে সাবধানে থাকতে হবে। কিছুতেই ফ্রিজে রাখা ঠাণ্ডা বা পঁচা-বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। এ সময় রোগীরা মুখের স্বাদের জন্য আনারসসহ টকজাতীয় ফল খেতে পারেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top