সকল মেনু

মৌলভীবাজারের রাজনগর পোর্টিয়াস মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতিতেও মডেল

 মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পোর্টিয়াস মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে নজির বিহীন দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সাড়ে তিন বছরের মাথায় তিনি সরকারী সকল বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে এমনকি বিদ্যালয়ের মূল কাজ লেখা-পড়ার দিকে মনোযোগ না দিয়ে সারা দিন বিদ্যালয় বহির্ভূত কাজে তিনি ব্যাস্ত থাকেন। তার এসব কর্মকান্ডে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্ঠি হয়েছে। এলাকার জনগন ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে তার এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিগত ২০মে ২০১৪ইং তারিখে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।  জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ ও ম্যানেজিং কমিটি সদস্য সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বিগত ১৯৮৯সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে রাজনগর পোর্টিয়াস উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি যে কোন মূল্যে প্রধান শিক্ষক হবার মনোবাসনা ব্যক্ত করতে থাকেন। সে সময় পোর্টিয়াসে কোন সুযোগ না থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে প্রতিবারই ব্যর্থ হন। অতঃপর পোর্টিয়াস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য হলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পর পর চারবার প্রধান শিক্ষকের আবেদন পত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম তিনবার নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি ৫ম/৬ষ্ট স্থান অর্জন করলেও চতুর্থবার অলৌকিক ভাবে তিনি প্রধান শিক্ষক হয়ে যান এবং বিগত ১লা নভেম্বর ২০১১ইং তারিখে এ পদে যোগদান করেন উল্লেখ্য যে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩০৬টি উচ্চ বিদ্যালয়কে মডেলে রুপান্তরের সহযোগিতা চুক্তিপত্রের আর্টিকেল-২.১০ অনুযায়ী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ন্যুনতম দ্বিতীয় শেণীর ¯œাতকোত্তর ডিগ্রীধারী হবার শর্ত রয়েছে। অথচ সকল শ্রেণীতে ৩য় বিভাগের ¯œাতক ডিগ্রীধারী জিল্লুর রহমান বিধি বহির্ভূত ভাবে প্রধান শিক্ষক হয়ে যান। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট পরবর্তী রিপোর্ট (যার স্বারক নং- ডিআইএ/মৌলভীবাজার/৪০৫-এস/চট্টঃ২৪২৭/৪) এ উল্লেখ রয়েছে।  শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট পরবর্তী রিপোর্টের মন্তব্য-১(ঝ)তে উল্লেখ করা হয় যে, মোঃ জিল্লুর রহমান প্রধান শিক্ষক প্রার্থী হয়েও নিজে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। যা সম্পূর্ণ নিয়োগ বিধির লঙ্গন। রিপোর্টে আরোও উল্লেখ করা হয়,পূর্বের পদ থেকে পদত্যাগ নাকরে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। তাই যোগদানের তারিখ থেকে ২৯/০২/২০১২ইং পর্যন্ত বেতন স্কেলে গৃহীত ৪৫৫০০/= টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরৎ যোগ্য। এমনকি মার্চ ২০১২ইং এর পরে আবারও বেতন ভাতা গ্রহন করলে তাও ফেরৎ যোগ্য হবে। অর্থ্যৎ অদ্যাবদি তার গৃহীত সমূহ বেতন ভাতা অবৈধ। রিপোর্টটি ম্যানেজিং কমিটির সভায় উত্থাপনের সুপারিশ থাকলেও আজ অবদি তিনি তা গোপন রেখেছেন।  লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে শতাধিক অভিযোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- (১)বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা অত্মসাৎ, (২)বিগত ২০১১-২০১২ অর্থবছরে পিআইও অফিস থেকে পাওয়া ৫টন চালের মূল্য ৬৫ হাজার টাকার বদলে ৩টন চালের মূল্য ৩৮ হাজার টাকা জমা। বাকি ২৭হাজার টাকা আত্মসাৎ, (৩)বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান সামগ্রী ও সরকার থেকে প্রাপ্ত ২টি ল্যাপটপ ও ১টি ডেক্সটপ নিজের বাসায় নিয়ে ব্যবহার ও ক্ষতি সাধন, (৪)সরকারী বিধি অনুযায়ী নিজের হাতে ৫‘শ অথবা কমিটির অনুমোন ক্রমে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিজের হাতে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা যায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা নাদিয়ে নিজের হাতে রেখেছেন। যা ব্যাংক ষ্টেটম্যান্টে ধরা পড়ে। (৫) সেশনের সাথে বিদ্যুৎ, টেলিফোন, চিকিৎসা, ইন্টারনেট ফি আদায় করলেও প্রতি মাসেই বিভিন্ন ছাত্র/ছাত্রীর নিকট থেকে বিভিন্ন হারে একই খাতে ফি অদায় করে আত্মসাৎ করা, (৬)যোগ্যতা নাথাকা সত্বেও নিজের এসএসসি পাশ স্ত্রীকে বিধি বহির্ভূত ভাবে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর কাম কেরানী হিসেবে নিয়োগ দেন এবং বিদ্যালয়ের সমূহ আথির্ক দায়িত্বে নিয়োজিত করেন,(৭)নিজ এলাকার মাহবুবুর রহমান ও সুজন নামে দুই জনকে নিজ প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয় তহবিল হতে মাহবুবকে ৫হাজার ও সুজনকে ৭হাজার টাকা অবৈধ ভাবে ঋনদেন যা আজও ফেরৎ হয়নি। (৮)শিবগাত উল্লাহ নামে একজনকে অস্থায়ী শিক্ষক হিসেব এনে বিদ্যালয় তহবিল হতে অবৈধ ভাবে নগদ ১০হাজার টাকা ও মাসিক ২হাজার ৫‘শ টাকা হারে ভাতা দিয়ে বিপিএড প্রশিক্ষনে প্রেরণ,(৯)বিদ্যালয়ের দীর্ঘ দিনের চৌকিদার নিরীহ আব্দুস ছত্তারকে বিগত ২০১২ সনের  ৩ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী দিয়ে মারপিট করেন এবং পরবর্তীতে তাকে অন্যায় ভাবে চাকুরীচ্যুত করেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানকে আসামী করে জজকোর্টে মামলা চলছে), (১০)ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ব্যাপারে অশালীন মন্তব্য সহ তাদের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নিজ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া, (১১) নিজে বেসরকারী চাকুরীজীবি হয়েও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার নিকটবর্তী সরকরী কোয়াটাওে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে প্রভাব খাটিয়ে সরকারী রাজস্ব ফাকি দিয়ে কোয়াটার ব্যবহার করা ইত্যাদি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top