সকল মেনু

কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

 ডাঃ জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের একটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের ছবি তুলে তা নগ্ন করে প্রকাশ করায় শিক্ষার্থী ও অবিভাবকের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে গত ৩ দিন থেকে বিদ্যালয় সংলগ্ন কালিগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে আসছে শিক্ষার্থীর অবিভাবক ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও ঘটনার মুল হোতা ঐ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেটর কাম কেরানী আশরাফুল আলমকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ হুজুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ২০১৩ সালে শিক্ষা সফরে যায়। এসময় ঐ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর আশরাফুল আলম ক্যামেরায় নবম ও দশম শ্রেনীর ২২ জন ছাত্রীর ছবি তুলে নিজের কাছে রেখে দেয়। পরবর্তীতে তার কু-প্রস্তাবে ছাত্রীরা রাজি না হলে তাদের ছবির মাথা কেটে নগ্ন ছবির সাথে জুড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ করে। এসব নগ্ন ছবি কালিগঞ্জ বাজারের দেয়াল, গাছ, বিভিন্ন কম্পিউটার দোকান ও মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়। এঘটনায় আশরাফুল আলমকে মুল আসামী করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনের নামে ২৪ এপ্রিল অবিভাবক যোগেশ চন্দ্র নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেন।
এঘটনার শিকার হুজুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জীবনের মুল্যবান সম্পদ নিয়ে ছিনিবিনি খেলায় তাদের এখন বাঁচা মরার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বলে জানান তারা।
ছাত্রীদের অবিভাবক যোগশ চন্দ্র, মহির উদ্দিন ও আব্দুল খালেক মুন্সী জানান, যে ঘটনা ঘটিয়েছে এর চেয়ে আমাদের মৃত্যু হওয়া ভালো। এমন নগ্ন ছবি দেখে আমাদের মেয়েরা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়ে শুধু কান্নাকাটি করছে। থানায় মামলা হলেও প্রধান আসামী আশরাফুল আলম ঐ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে স্বপদে বহাল তবিয়তে আছে। মুল আসামী যে আমাদের মেয়েদের নগ্ন ছবি বানিয়ে ইজ্জত ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে তাদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমরা অবিভাবকসহ এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী চালিয়ে যাবো। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে।
কালিগঞ্জ হুজুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তবারক আলী সরকার জানান, ঘটনাটি আমি মুখে শুনেছি। আমাকে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। শিক্ষার্থী ও অবিভাকদের লিখিত অভিযোগ পেলে আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, অভিযোগের ভিত্ততে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রাপ্ত আলামতের ভিত্তিতে পর্নোগ্রাফী আইনে নাগেশ্বরী থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকায় খোরশেদ নামের একজনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ছাত্রীদের নগ্ন ছবি প্রকাশকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেয়া হলে, বন্ধ হবে এধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা। ফিরে আসবে শিক্ষার পরিবেশ, স্বস্তি পাবে অবিভাবক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top