কামাল হোসেন মাসুদ, নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী জেলা সিপিবি সদস্য ও সদর উপজেলা সিপিবির সভাপতি মফিজুর রহমানের (৬০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে সুবর্ণচর উপজেলার আল-আমিন বাজার রাস্তা মাথার পশ্চিমে জমিন থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে চরজব্বর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে; কে বা কারা কেন তাঁকে হত্যা করেছে এ বিষয়ে পুলিশ এখনও কোন রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি কিংবা কাউকে গ্রেফতার বা তাঁর ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও উদ্ধার করতে পারেনি।নিহত মফিজুর রহমান হাতিয়া উপজেলার চর কিং ইউনিয়নের ফরাজী গ্রামের মৃত রহমত উল্যার ছেলে। তিনি বর্তমানে স্বপরিবারে জেলা সদরের মাইজদী খন্দকার পাড়ার একটি বাসাতে ভাড়া থাকেন। এ ছাড়া তিনি প্রগতী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর একজন কর্মকর্তা। সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানা পুলিশ জানান, রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পথচারীরা একটি গলাকাটা লাশ দেখে চরজব্বর থানায় খবর দেয়। পরে উপ-পরিদর্শক (এস.আই) বাতেনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে পৌনে ১২টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে গণমাধ্যম কর্মিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ সেনাক্ত করে এবং পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারাও থানায় গিয়ে এটি মফিজুর রহমানের লাশ বলে নিশ্চিত হলে পুলিশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
নিহত মফিজুর রহমানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, রোববার দুপুরের খাওয়া শেষে ৪টার দিকে নাতীকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেন। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মোটরসাইকেলে নাতীকে খন্দকার নগরের ভাড়া বাসার সামনের গেইটে নামিয়ে গিয়ে মিটিং আছে বলে চলে যান। রাত ৮টার দিকে তাঁর ব্যবহৃত সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুই ঘন্টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসবে বলে জানান। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে পুনরায় নাতী তাঁর সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন এবং কেন বার বার তাঁকে বিরক্ত করা হচ্ছে এমন বলে নাতীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরবর্তীতে রাত ১০টার দিকে ফোন দেয়া হলে তাঁর নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এ সকাল পর্যন্ত তাঁকে সেলফোনে পাওয়া যায়নি। সোমবার সকাল ১০টার দিকে গণমাধ্যম কর্মিরা বাসায় ভীড় করলে বুঝতে পারেন মফিজুর রহমানকে কে বা কারা হত্যা করেছে।
নিহত মফিজুর রহমানের রাজনৈতিক সহকর্মি জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক জাফর উল্যা বাহার বলেন, রাজনৈতিক জীবনে মফিজুর রহমান চরাঞ্চলের ভূমিহীনদের সাথে একাত্ততা পোষন করে ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে খাস জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের মাঝে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছাড়া কারো সাথে ব্যক্তিগত কোন ধন্দ্ব নেই। তিনি এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারকারী চরজব্বর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) বাতের হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ খবর পাওয়ার সাথে সাথে অভিযান শুরু করেছে। এ ছাড়া পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।