আফিফা জামান,জবি, ২৬ এপ্রিল : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে সমাবর্তন বা কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সনদপত্র প্রদান করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে এক নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
গত ১৬ এপ্রিলের নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হওয়া এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হওয়া (বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা মূল সনদ তুলতে পারবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন হওয়া দুটি ব্যাচ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ব্যাচের ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সনদপত্র প্রদানে তোড়জোড় শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কোনো সমাবর্তন বা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সনদপত্র প্রদান করা হবে। কর্তৃপক্ষের এ ধরণের ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বড় চাওয়া, আনুষ্ঠানিকভাবে একটা কালো গাউন আর সনদপত্র। যে যার মতো সনদ নিয়ে চলে যাবে, এটা কাম্য নয়।
আইন বিভাগের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের আসাদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ফসল আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সনদ পাচ্ছি। কিন্তু এখন দেখছি সমাবর্তন ছাড়াই সনদ দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। এটা কোন শিক্ষার্থী আশা করে না।’
ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের জাকির হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই এতগুলো শিক্ষার্থীকে সনদ দিয়ে বিদায় করা খুবই দুঃখজনক।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে এক আইন পাসের মাধ্যমে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরিত করা হয়। একই বছর থেকে ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত কলেজ আমলের (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হওয়া) ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৬৬ জন এবং ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের ১৫ হাজার ৭১০ জন ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সনদ পাবেন। অর্থাৎ কলেজ আমলের ১৯ হাজার ২৭১ জন ছাত্রছাত্রী এই সনদ পাবেন।
অন্যদিকে ২০১২ সালের ১৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে বলা হয়, কলেজ আমলের দুটি ব্যাচ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষার্থী মাস্টার্স শেষ করেছেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে ওই সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন দেওয়া অপরিহার্য। উপাচার্য উদ্যোগ নিলেই এটি আয়োজন করা সম্ভব। উপাচার্যের সঙ্গে এই নিয়ে কথা হয়েছে। শীতকালে একটা সমাবর্তন করার চিন্তাভাবনাও আমাদের রয়েছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও সমাবর্তনের পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। তা ছাড়া এখানে সমাবর্তনের বিষয়ে অভিজ্ঞ কেউ নেই যে ইচ্ছে করলেই হঠাৎ এত বড় আয়োজন করা সম্ভব।’
আগামী জুন-জুলাইয়ে সমাবর্তন আয়োজনের পরিকল্পনার রয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।