সকল মেনু

সমস্যা যখন পানিশূন্যতার- লক্ষণ, চিকিৎসা ও সতর্কতা

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক, ৩১ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : প্রচন্ড গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত? মনে হচ্ছে প্রাণবায়ু বের হয়ে যাবে? খুব সাবধান থাকুন, কারণ এই গরমে শুধু অস্বস্তিই নয়, বরং আপনার শরীরে হতে পারে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। গরমে ঘেমে পানিশূন্যতা হওয়াটা কিন্তু তেমন অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিভাবে বুঝবেন আপনার বা কাছের কারও পানিশূন্যতা হয়েছে কিনা? কীভাবেই এর প্রতিকার করা যাবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক।

কী কারণে হয় পানিশূন্যতা?

শরীরে যতটা পানি প্রবেশ করে, তারচাইতে বেশি পরিমাণে বের হয়ে গেলে পানিশূন্যতা হতে দেখা যায়। শরীরে পানির ভারসাম্য ওলটপালট হয়ে যায় তখন। তীব্র পানিশূন্যতায় মৃত্যুও হতে পারে। গরমে পানিশূন্যতার মূল কারণ ঘেমে যাওয়া। আমরা যত ঘামি তার তুলনায় কম পানি পান করি। এই গরমে অনেকটা সময় বাইরে রোদে থাকা অথবা অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলেও পানিশূন্যতা হতে পারে।

কখন বুঝবেন পানিশূন্যতা/ডিহাইড্রেশন হয়েছে?

আপনি নিজে বা আপনার সামনে কেউ ডিহাইড্রেশনের পাল্লায় পড়লে বুঝবেন কীভাবে?
– প্রচণ্ড পিপাসা
– মুখ এবং জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া
– দুর্বলতা
– মাথা ঘোরা
– বুক ধড়ফড় করা
– বিভ্রান্তি
– অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
– ঘামা বন্ধ হয়ে যাওয়া
– মুত্রের পরিমাণ অত্যন্ত কম হওয়া এবং গাড় হলুদ রঙের হওয়া

কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরী?

খুব খারাপ ধরনের পানিশূন্যতা হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। নইলে স্বাস্থ্যের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমন গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলো দেখে নিন।
– এক দিনের বেশ সময় ধরে বারবার বমি হওয়া
– ১০১ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকা
– ২ দিনের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া থাকা
– ওজন হঠাৎ করে কমে যাওয়া
– মুত্রের পরিমাণ কম হওয়া

কখন রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে হবে?

– ১০৩ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকলে
– বিভ্রান্তি থাকলে
– শরীর অতিরিক্ত দুর্বল মনে হলে
– প্রচণ্ড মাথাব্যাথা
– খিঁচুনি
– নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া
– বুক ও পেটে ব্যাথা হওয়া
– অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
– ১২ ঘণ্টা যাবত মুত্রত্যাগ না হওয়া

প্রতিকার

পানিশূন্যতা হলে বাড়িতে বসেই কিছুটা চিকিৎসা করে ফেলা যায়, যদি তা ডাক্তারের কাছে যাবার মতো ভয়ংকর কিছু না হয়।

  • – ছোট ছোট চুমুক দিয়ে পানি খেতে থাকুন
  • – স্যালাইন খেতে পারেন
  • – ঘরে তৈরি জুস দিয়ে ললি আইসক্রিম জমিয়ে খেতে পারেন
  • – বরফের কুচি চিবিয়ে খেতে পারেন
  • – শরীর ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত কাপড়চোপড় পরে থাকবেন না।
  • – হালকা করে এসির নিচে থাকতে পারেন
  • – এসি না থাকলে ফ্যানের নিচে থাকুন, শরীরে একটু ভেজা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখতে পারেন
  • – শরীরে ঠাণ্ডা পানির ছিটা দেওয়া যেতে পারে
  • – আইস প্যাক বা বরফের ত্বকের সংস্পর্শে না আনাই ভালো। এতে লাভের চাইতে ক্ষতি হয় বেশি।

কী করে এড়াবেন ডিহাইড্রেশন?

একটু সতর্ক হয়ে চললেই ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এই উত্তপ্ত আবহাওয়ায়।

  • – বাইরে যখনই বের হন না কেন, সাথে পানির বোতল রাখুন। যত বেশি ঘাম হবে তত বেশি পানি পান করুন।
  • – যেদিন তাপমাত্রা বেশি থাকবে সেদিন ভারী ব্যায়াম করবেন না।
  • – চেষ্টা করুন সকাল বা বিকালের দিকে বাইরে বের হতে।
  • – বৃদ্ধ মানুষ এবং শিশুরা যথেষ্ট পানি পান করছে কিনা তার দিকে খেয়াল রাখুন।
  • – বাইরে বের হবার সময়ে হালকা রঙের, ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
  • – একটানা বেশি সময় গরম এলাকায় থাকবেন না। মাঝে মাঝে ছায়ায়, ফ্যান বা এসির নিচে এসে নিজেকে ঠাণ্ডা করে নিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top