সকল মেনু

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সিটিসেল

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ২৬ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বিশেষ ব্যবস্থায় ‘লাইসেন্স বাতিল’ সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত হওয়ায় আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছেন দেশের প্রথম সেলফোন অপারেটর সিটিসেল কর্মকর্তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি-কে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধে আগস্ট পর্যন্ত সময় পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে অপারেটরটি।

এদিকে ১১ মাস পার হলেও বরাদ্দকৃত ‘অবশিষ্ট’ তরঙ্গ না পাওয়ায় ব্যবসায়িক ঝুঁকির মুখে দেশের প্রথম সেলফোন অপারেটর সিটিসেল। গ্রাহক কমে যাওয়া আর তরঙ্গ ফি পরিশোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র চাপে নাকাল দশা এই অপারেটরটির ব্যবসায় অংশীদারদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ অক্টোবর সিটিসেলের অনুকূলে ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ১০ মেগাহার্টজ নবায়নকৃত তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ২০১২ সালের ৭ আগস্ট বিটিআরসি ‘রেডিও কমিউনিকেশন ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স’ ইস্যু করলে দেখা যায় বরাদ্দকৃত তরঙ্গ পূর্বে বরাদ্দকৃত তরঙ্গ থেকে কম।

ফলে ওই বছরের ৮ আগস্ট চিঠির মাধ্যমে তা সংশোধনের জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ জানায় সিটিসেল। কিন্তু কয়েক দফায় অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিটিআরসি ‘লাইসেন্স ডকুমেন্ট’ সংশোধন করেনি বলে জানিয়েছেন সিটিসেল কর্মকর্তারা।

সিটিসেল একজন কর্মকর্তা জানান, বরাদ্দকৃত তরঙ্গ না পওয়ায় ব্যবসায়িক হুমকীর কথা উল্লেখ করে এ বিষয়ে গত বছর ১৮ এপ্রিলও বিটিআরসি-কে জানানো হয়েছে। মূলত এমন অমীমাংসিত পরিস্থিতির কারণে সিটিসেল থেকে অবশিষ্ট তরঙ্গ ফি পরিশোধে বিলম্ব হয়।

সূত্রটি আরো জানায়, গত বছর ৮ এপ্রিল চিঠির মাধ্যমে সিটিসেলের অবশিষ্ট তরঙ্গ হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত বিটিআরসি তা হস্তান্তর করেনি। আর বরাদ্দকৃত তরঙ্গ না পাওয়ায় সিটিসেল গুরুতরভাবে ব্যবসায়িক ক্ষতির (রাজস্ব ক্ষতি, নেটওয়ার্কের ক্ষতি, গ্রাহক হারানো) সম্মুখীন হচ্ছে এবং ক্রমশ ব্যবসার অবনতি ঘটছে বলে দাবি সিটিসেল কর্মকর্তাদের।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর টুজি লাইসেন্স রেনুয়্যাল ফি, ৯ নভেম্বর স্পেকট্রাম অ্যাসাইনমেন্ট ফি এবং ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি অ্যানুয়্যাল লাইসেন্স ফি পরিশোধ করেছ সিটিসেল। এর পাশাপাশি এখন বাকি ৫১% অর্থ পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ভাষ্য মতে, বিটিআরসি কর্তৃক সংশোধিত লাইসেন্স ইস্যুর তারিখ থেকে ছয় মাসের মধ্যে অর্থের সংস্থান করতে সক্ষম হবে।

জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ডাক, টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে স্পেকট্রাম অ্যাসাইনমেন্ট ফি পরিশোধের জন্য সিটিসেলকে ছয় মাসের সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৯ মার্চ সিটিসেল একটি পে-অর্ডাররে মাধ্যমে বিটিআরসির কাছে ১৬ কোটি ৬২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮১ টাকা জমা দেয়।

এর আগে গত ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কমিশনের ১৬৪ তম সভায় সিটিসেলের কাছে বকেয়া রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে লাইসেন্স এর ক্লজ এবং টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর ৪৬ ধারার বিধান অনুযায়ী লাইসেন্স বাতিলসহ কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে মর্মে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ লক্ষ্যে কমিশন গত ২ ফেব্রুয়ারি একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। তার উত্তরে সিটিসেল আট কারণে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল না করার অনুরোধ জানিয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির গত ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে সিটিসেলের প্রসঙ্গে বলেছে, “প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে কিয়দংশ বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ করেছে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে অবশিষ্ট বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের অঙ্গীকার করেছে। সে বিবেচনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক সভার সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত ১৬৪তম কমিশন বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম আপাতত স্থগিতর সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top