সকল মেনু

তারুণ্য নির্ভর জামায়াতে নেতৃত্ব সংকট

ঢাকা, ১৬ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ৭৩ বছরের পুরোনো দল জামায়াতে ইসলামী তরুণ নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। দলটির নীতি নিধারণসহ সাংগঠনিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী সারা দেশে নির্দেশনা পাঠানোর কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা। কারণ, অভিজ্ঞ নেতৃত্বের চরম সংকট দলটিতে।

জামায়াত নেতাদের দাবি, তিন শীর্ষ নেতার মৃত্যু এবং আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ অধিকাংশ শীর্ষ ও প্রবীণ নেতা কারাগারে। ফলে দলটির নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই চলে গেছে তরুণদের হাতে।

অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘জামায়াতে কোনো ধরনের নেতৃত্ব সংকট নেই। বরং বর্তমান নেতৃত্বের বিচক্ষণতার কারণেই উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত সফলতা পাচ্ছে।’

হেলাল আরো বলেন, ‘জামায়াত নিষিদ্ধ দল নয়। অথচ সরকার জামায়াতের সঙ্গে নিষিদ্ধ দলের মতো আচরণ করছে। এই বিমাতাসুলভ আচরণ এবং দলের সিনিয়র প্রায় সব নেতা জেলে থাকায় তরুণদেরকে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ২১ সদস্যের মধ্যে প্রকাশ্যে দেখা যায় মাত্র দুজনকে। তারা হলেন : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক এবং আবু নাসের মো. আবদুজ জাহের। এদের মধ্যে ব্যারিস্টার রাজ্জাক আইনি বিষয়াদি ছাড়া দলীয় কোনো কর্মকান্ডে সক্রিয় নন।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবু নাছের মো.আবদুজ জাহেরও সব ধরনের দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে অনেক দূরে। ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের কার্যক্রম বলতে গেলে গোপন স্থান থেকে মিডিয়ায় বিবৃতি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই না।

অপর দুই সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মজিবুর রহমান এবং মিয়া গোলাম পরওয়ার বেশ কয়েকটি মামলায় আটক হয়ে কারাগারে। এর আগে আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এ ছাড়া দলটির ভেতরে সবার কাছে আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত নায়েবে আমির অধ্যাপক এ কে এম নাজির আহমদের মৃত্যুতেও প্রবীণ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নেতৃত্বের সংকট তৈরি হয় দলটিতে।

দলীয় সুত্রগুলো জানায়, জামায়াতের নীতি নির্ধারণ ও দলীয় কর্মসূচি প্রণয়নে এখন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছেন নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমীর রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য হামিদুর রহমান আজাদ, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ, সেলিমউদ্দিন এবং হেলালউদ্দিন।

সূত্রগুলো আরো জানায়, এদের প্রত্যেকেই ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হয়েছে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায়।

এ ছাড়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির রায় দিয়েছে। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান এবং কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেম আলীর বিচার চলছে।

এভাবে প্রবীণ নেতাদের পদ শূন্য হওয়ার ফলে তরুণ নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে পুরোনো রাজনৈতিক দল জামায়াত ইসলামী।

 

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top