সকল মেনু

চাকমা ভাষা ও সাহিত্য

সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিবেদক, ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রধান জন গোষ্ঠি চাকমা। বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে সর্বশেষ পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমাদের বসবাস। তাই  বৃহৎ ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবারের পূর্ব দিকে সর্বশেষ সীমানায় অবস্থিত ভাষা ও উপভাষার মধ্যে চাকমা ভাষাও পড়ে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে এ ভাষার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। উল্লেখ্য যে চাকমাদের নিজস্ব বর্ণমালা আছে। মোট ৩৯টি বর্ণমালা রয়েছে, তারমধ্যে
স্বরবর্ণ ৫টি
পিছপুঝা-আ, ডেলভাঙ্যা-ই, বচ্শি-উ, লেজউবা-এ, বাজন্যা-ওয়া
ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৪টি
চুচ্যাঙ্যা-কা, গুজাঙ্যা-খা, চান্দ্যা-গা, তিনডাল্যা-ঘা, ছিলাম-ঙা, দ্বিডাল্যা-চা, মজরা-ছা, পদলা-জা, উড়াউড়ি-ঝা, তেলোচ্যা-ঞা, দ্বিআদাৎ-টা, ফুদাদিয়াৎ-ঠা, আদুভাঙা-ডা, লেজভড়াৎ-ঢা, পেট্টুয়া-ণা, ঘঙদাৎ-তা, জগদাং-থা, দুলনী-দা, তলমুআ-ধা, ফারবান্যা-না, পাল্যা-পা, উবরপদলা-ফা, উপরমুআ-বা, চেরডাল্যা-ভা, বুগতপদলা-মা, ডেলভাঙ্যা-যা, দ্বিদাস্যা-রা, তলমুয়া-লা, ভুদিবুক্যা-ষা/শা, উবরমুআ-হা, চিময্যা-যা, এবফুদা, দ্বিফুদা, চানফুদা।
চাকমা বর্ণগুলোর সঙে বার্মার শানবর্ণের এবং উত্তর পূর্ব ভারতের আসামের অধুনালুপ্ত অহোম বর্ণের এবং অরুনাচলের খামতি বর্ণের সাদৃশ্য রয়েছে। অতীতে চাকমা বর্ণগুলো দিয়ে তালপাতার উপর তাদের প্রাচীন ধর্মীয় শাস্ত্র আগরতারা লেখা হয়েছে। এখন চাকমারা বৌদ্ধ ধর্মের হীনযান মতাদর্শ অনুযায়ী তাদের মাঝে প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এই সব শাস্ত্রের ব্যবহার আর নেই। তবে চাকমা ওঝা বা বৈদ্যরা এখনো চাকমা বর্ণের চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়ক বই তাল্লিক শাস্ত্র লেখেন। এসব চিকিৎসা দ্বারা অনেক রোগী ভালো হয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে, ষাটের দশক থেকে ছাপানোর সুবিধার্থে চাকমা কবি ও লেখকেরা বাংলা বর্ণের চাকমা ভাষায় সাহিত্য চর্চা করে আসছেন। ইতিমধ্যে বাংলা বর্ণের চাকমা ভাষায় বেশ কয়েকটি কবিতা নাটক প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে কিছু লেখার আগে চাকমা ভাষার উল্লেখযোগ্য দিক সমুহ আলোচনা করা গেল। নিম্নে কয়েকটি চাকমা সর্বনাম সম্বন্ধে আলোচনা
চাকমা                            বাংলা
 মূই                              আমি
 আমি                             আমরা
      তুই                            তুমি, তুই
                  তুমি                   তোমরা (আপনি, আপনারা)
তে                                সে
               তারাহ                     তাহারা (তিনি, উনারা)
চাকমাতে বহু বচনে আমি এবং তুমি শব্দ দুটি ব্যবহৃত হয়। টাইপোলজিক্যাল ক্লাসিফিকেশন অনুযায়ী চাকমাদের ভাষা সাধিত ভাষার অর্ন্তভূক্ত। এতে বিভিন্ন কালে বিভিন্ন পুরুষে বচন ভেদে আলাদা ক্রিয়া মূলের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন –
চাকমা                            বাংলা
 মুই লঙ                          আমি লই
 আমি লই                         আমরা লই
 তুই লচ                          তুমি লও
  তুমি ল                          তোমরা লও
 তে লয়                           তারা লয়
তারাহ লন                         তারা লয়।
চাকমাদের ভাষায় শ্বাসাঘাত একটি ধ্বনি মূলীয় উপাদান হিসেবে কাজ করে। ফলে কোন ধ্বনির উপর শ্বাসাঘাত যুক্ত হলে পূর্বের অর্থ বদল হয়ে নতুন কোন অর্থ বিশিষ্ট শব্দও গঠিত হতে পারে। এ থেকে চাকমা ভাষার টোন বা স্বরের এর অস্তিত্ব থাকার কথা জানা যায়। যেমন
উল (ব্যাঙের ছাতা)
উ√ল (পাছার উচুঁ স্থান)
উচ (সিদ্ধ করা)
উ√চ (হুঁশ) ইত্যাদি।
চাকমাতে ক্রিয়া মুলের সঙ্গে কৃৎ প্রত্যয় না যুক্ত হয়ে ক্রিয়া বাচক শব্দ গঠিত হয়। যেমন
খানা (খাওয়া)
পানা (পাওয়া)
লনা (লওয়া)
গরানা (করা) ইত্যাদি।
চাকমাতে না বোধক বাক্য গঠনের বেলায় বর্তমান কালে ও ভবিষ্যৎ কালে ক্রিয়ার পূর্বে ‘ন’ এবং অতীত কালে শ্বাসাঘাতযুক্ত ‘না’ বসে। যেমন
মুই ইয়ান ন খাঙ (আমি এটা খাই না)
মুই ইয়ান ন খেইম (আমি এটা খাব না)
মুই ইয়ান ন খাঙ (আমি এটা খাইনি)
চাকমা ভাষায় বহু রূপকথা, গল্প, ছড়া, ধাঁধা, গান, পালা, বারমাসী ইত্যাদি রয়েছে। চাকমা ভাষায় রূপকথাকে পজ্ঝন, ধাঁধাকে বানাহ্ , ঘুম পাড়ানি গানকে ‘ওলিদাগনি গীত’ বলে। তাদের ভাষার বড় একটি সম্পদ হলো তাদের অজস্র প্রবাদ বাক্য ও বাগধারা শব্দ গুলো। চাকমারা প্রবাদ বাক্যকে ‘দাঘকধা’ বলে এর আক্ষরিক অনুবাদ ডাকের বচন বলা যায়। চাকমাদের প্রবাদ বাক্যে প্রকৃতি, মানুষ ও জীবন সম্পর্কে তাদের দৃষ্টি ভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার কথা জানা যায়। নিচে কয়েকটি চাকমা প্রবাদ বাক্য আলোচনা করা হলো।
পথ ভালা বেঙা যা,
ভাত ভালা সুধা খা।
অর্থাৎ- পথ ভালো হলে দীর্ঘ পথেও যাওয়া উচিৎ আর ভাত ভালো হলে তরকারি ছাড়াও খাওয়া যায়।
মা-র গুদিয়ে পুয়া,
ভূইয়র গুদিয়ে রুয়া।
অর্থাৎ মায়ের গুণে ছেলে বড় হয়, জমির উর্ব্বরতার ফলে ধানের চারা বৃদ্ধি ঘটে।
জাদে জাত তগায়,
কাঙারা গাত তগায়।
অর্থাৎ স্বজাতির কাছে লোক আশ্রয় গ্রহণ করে, যেমন কাকাঁড়া গর্তে আশ্রয় গ্রহণ করে।
এক মোক্যা সুঘর ভাত,
দ্বি মোক্যা লাদি ভাত,
তিন মোক্যা কবালত হাত।
অর্থাৎ এক স্ত্রীওয়ালা খায় সুখে ভাত, দুই স্ত্রী ওয়ালা খায় লাথিতে ভাত, তিন স্ত্রী ওয়ালার কপালে হাত।
চাকমা চারণ কবিদেরকে ‘গেংগুলি’ বলে থাকে। তারা বেহালা বাজিয়ে বা বাঁশি বাজিয়ে সুরে সুরে গান গায়। চাকমাদের দুটি বিখ্যাত পালা গানের নাম ‘রাঁধামন ধনপুদি’ ও ‘চাদিগাঙ ছাড়া’। প্রথমটিতে রাঁধামন ও ধনপুদির নামে দুজন প্রেমিক প্রেমিকার অনবদ্য প্রেমের কাহিনী আছে। এ ব্যাপারে জনশ্রুতি আছে গেংগুলিরা সাতদিন সাতরাত ধরে গেয়েও রাঁধামন ধনপুদি পালা গান শেষ করতে পারে না। চাদিগাঙ ছাড়া পালা গানের ক্ষেত্রেও একই কথা। এতে চাকমাদের আদি নিবাস চম্পক নগর থেকে বিজয় গিরি নামক যুবরাজের নেতৃত্বে দিগ্বিজয়ে বেরিয়ে কিভাবে চম্পক নগর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ছিল তার বিষাদ কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে।
চাকমাদের আদি কবি হলেন শিবচরণ। তার রচিত কবিতাগুলো এক একটি ‘লামা’ বলা হয়। এগুলো গোজেন লামা বইয়ের অন্তগর্ত। কবি শিবচরণ ১১৮৪ বাংলা সনে এটি রচনা করেন। এই রচনা কাল ১১৮৪ বাংলা সন ধরলে তিনি ১৭৭৭-৭৮ খ্রিস্টাব্দে গোজেন লামা রচনা করেছেন। কবি শিবচরণ সাধকও ছিলেন। তিনি গভীর অরণ্যে ধ্যান করতেন। তার সম্পর্কে জনশ্রুতি আছে যে তিনি অমরত্বের জ্ঞান অর্জন করে সিদ্ধি লাভ করেন। কবি শিবচরণের গোজেন লামার একটি মূল বাণী হল
যে বর মাগে সে বর পায়,
গোজেন বর দিলে ন ফুরায়।
অর্থাৎ, যে আর্শীবাদ প্রার্থনা করে সে আর্শীবাদ পাওয়া যায়। গোজেন আর্শীবাদ দিলে কখনও ফুরায় না।
উল্লেখ্য কবি শিবচরণের রচিত গোজেন লামা পান্ডুলিপি গুলো চাকমা বর্ণের পাওয়া যায়। সাতের দশকে চাকমা সমাজ নতুন চিন্তা ও ধারণার সঙ্গে পরিচিত হয়। এর ফলে বাংলা সাহিত্যে জোয়ার আসে। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত জুমিয়া ভাষা প্রচার দপ্তর জুভাপ্রদ কর্তৃক এবং ১৯৮১ সাল থেকে জুস ইসথেটিক্স কাউন্সিল (জাক) কর্তৃক বেশ কিছু চাকমা কবিতা বই প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকটি চাকমা নাটক রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি  এমনকি ঢাকার শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণেও মঞ্চস্থ হয়। ১৯৭৮ সালে ননাধন রচিত ‘রংধং’ (রঙধঙ) এবং কবি দীপংকর শ্রীজ্ঞান চাকমার রচিত ‘পাদারঙ কোচপানা’ (সবুজপাতার ভালবাসা) প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য ১৯৭৩ সালে দীপংকর শ্রীজ্ঞান চাকমা রচিত অন্যমনে নামক একটি কবিতা ও রাশিয়াতে রুশ ভাষায় অনুদিত একটি বাংলা কবিতা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে ছিল।
১৯৮৭ সালে সুহৃদ চাকমা কর্তৃক রচিত ‘র্বাগী’ ১৯৯২ সালে কবিতা চামা কর্তৃক ‘জ্বলি ন উধিম কিত্তেই’ এবং ১৯৯৫ সালে মৃত্তিকা চাকমা কর্তৃক রচিত ‘দিগবন সেরেত্তুন’ বাংলা বর্ণের চাকমা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্যামল কান্তি তালুকদার, শিশির চকমা, কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, পরমানন্দ চাকমা, রাজা দেবাশীষ রায়সহ আরো অনেকে বিভিন্ন  সংকলনে চাকমা সাহিত্য সম্পর্কে লিখেছেন।
ষাটের দশক থেকে চাকমা নাটক মঞ্চস্থ হতে শুরু করে এযাবত কাল পর্যন্ত প্রায় ২০টির মতো নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। ১৯৭৮ সালে রাঙ্গামাটিতে ননাধন চাকমা কর্তৃক লেখা প্রথম চাকমা নাটক ‘বেঙাবৈদ্য’ (শয়তান বৈদ্য) মঞ্চস্থ হয়। এতে গ্রাম্য বৈদ্যদের তন্ত্রমন্ত্র, ভেলকী, জাদু, টোনা এবং তাদের কারো কারোর অন্ধ বিশ্বাসের ব্যাপারে কটাক্ষ করে এটি লেখা হয়েছে। এতে অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে বাস্তববাদী হওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর নানাধরণের লেখা আরো একটি নাটক ‘নীরমোন সবন। (নীল পাহাড়ের স্বপ্ন) রাঙ্গামাটিতে মঞ্চস্থ হয়। এটি লুসেই জীবনের রোমাঞ্চ ও আনন্দ নিয়ে লেখা হয়েছে।
১৯৮২ সালে ডা. ভগদত্ত খীসা কর্তৃক লেখা হয় অয় ‘নয় বৈদ্য’ (হ্যাঁ না বৈদ্য) মঞ্চস্থ হয়। এতেও গ্রাম্য বৈদ্য হাতুরে চিকিৎসার প্রতি কটাক্ষ করা হয়। প্রকারান্তরে এতে চাকমা সমাজে আধুনিক চিকিৎসা প্রতি মনযোগ হওয়ার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে চিরজ্যোতি চাকমা কর্তৃক লেখা ‘আনাত ভাঝি উধেকা-মু’ (আয়নায় কার মুখ ভেসে উঠে) মঞ্চস্থ হয়। এ নাটকে কোন কোন মহিলার ধর্ম বিষয়ক কাজ করার অজুহাত দেখিয়ে গৃহস্থালি কাজ থেকে সরে থাকার ব্যাপারে কটাক্ষ করা হয়েছে। এরপর ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত শান্তিশয় চাকমা কর্তৃক রচিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা চারটি চাকমা নাটক মঞ্চস্থ হয়। এগুলো হল- যে দিনত যে কাল (যেই দিনে সেউ কাল), বিঝু রাম স্বর্গত যানা (বিঝুরামের স্বর্গ যাত্রা), আনদারত জুনি পহর (আধারে  জোনাকির আলো), ঝরাপাদার জীংকানি (ঝরা পাতার জীবন)।
এ চারটি নাটকের মধ্যে বিঝুরাম স্বর্গত যানা ১৯৯৫ সালে নাটকটি চাকমা সমাজের ঐ সময়ের মূল্যবোধের অবক্ষয় ও সুশীল সমাজ গঠনে ওপর জোর দিয়ে লেখা। ঝরা পাদার জীংকানি নাটকে চাকমাদের শহরের জীবন ও গ্রাম্য জীবনের মধ্যে টানা পোড়ান কাহিনী পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে মৃত্তিকা চাকমা রচিত কয়েকটি চাকমা নাটক ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৪ সালে মধ্যে মঞ্চস্থ হয়। এগুলো হল গোজেন মহেন্দ্রর বনবাস (মহেন্দ্রের বনবাস),
একজুর মানেক (এক জোড়া মানিক) এদের মধ্যে গোজেন মহেন্দ্র বনবাস নাটকটি ১৯৯১ সালের ১৪ই জুন ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়ে গৌরব অর্জন করে। এসব নাটকে প্রেম- ভালবাসা, রোমান্স, অ্যাডভেঞ্জার, অতীন্দ্রিয় বিষয়াদি স্থান পেয়েছে। কিছু নাটকে সামাজিক চরিত্র রূপকের সাহায্যে সুন্দর ভাবে প্রতিফলিত করা হয়েছে।
১৯৯৫ সালে রাঙ্গামাটিতে কেবল মঞ্চেই মঞ্চস্থ হয়নি, মঞ্চের বাইরে বিভিন্ন স্থানে শুটিং করে ভিডিওতে এর অভিনয় রেকর্ড করে ধারণ করা হয়। বলা বাহুল্য এটির আউটডোর  শুটিংয়ের সময় ঢাকা থেকে আগত আরণ্যক নাট্যদল বিভিন্ন দৃশ্যাবলী রেকর্ড করার কাজে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়। এই আন্দারত পহ্র নাটকে সারাধন এবং পরানি নামক দুজন প্রেমিক -প্রেমিকার তিন তিনবার বনে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করার কারণে তাদেরকে কিভাবে গ্রামের মোড়ল (কার্ব্বারী) এর বাড়ীতে বিচার করে শুকর জরিমানা করা হয় এবং সেগুলো দিয়ে গ্রামের লোকদের ভোজ দিয়ে তারপর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়, সেই সর্ম্পকিত অনেক কাহিনী আছে। এতে চাকমাদের সামাজিক প্রথা সর্ম্পকে
কিছু কিছু বিষয় জানা যায়। ১৯৯৯ সালে মৃত্তিকা চাকমা লিখিত ‘হককানির ধনপানা’ নামক আরও একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়, এই মঞ্চায়ন সর্ম্পকে হরি কিশোর চাকমা  লিখেছেন, সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে মঞ্চায়ন করল চাকমা নাটক হক্কানির ধনপানা, নাটকটিতে সমাজের নানা অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।
উল্লেখ্য সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর সংস্কৃতির সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ক্ষেত্রে ১৯৭৮ সালে রাঙ্গামাটিতে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতেও প্রতিষ্ঠা করা হয়। ইতোমধ্যে এই ইনস্টিটিউটগুলি তাদের কাজের বিভিন্ন ভাবে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। পরিশেষে এই আশা করা যায় যে, বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার যে ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে এগুলো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির মাধ্যমে সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ক্ষেত্রে সরকার আরো অধিকতর মননশীল ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। এতে করে দেশের সংস্কৃতির অঙ্গনে বিরাট সমৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতা আসবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top