সকল মেনু

অ্যান্ড্রয়েড রুটিং: কি ও কেন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ২০ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :  অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে বেশ অ্যাডভান্সড একটি ফিচার হচ্ছে রুট অ্যাকসেস। শুধু নাম থেকে সাধারণ ব্যবহারকরীদের এই ফিচারটির সম্বন্ধে বোঝা বেশ কঠিন, তবে বিষয়টি খুব কঠিন নয়। তবে সঠিকভাবে বোঝার জন্য কিছু জ্ঞান প্রয়োজন। আমরা জানি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটি লিনাক্স কার্নেলের ওপর তৈরি, বলা চলে লিনাক্সের একটি খুব বিশেষ সংস্করণ হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড। লিনাক্সের যেসব ফিচারসমূহ অ্যান্ড্রয়েডে নিয়ে আসা হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে রুট অ্যাকসেস। তবে কোনও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসেই শুরু থেকে রুট অ্যাকসেস দেয়া থাকে না। এই ফিচারটি ফ্যাক্টরি থেকেই দিয়ে না দেয়া বা রুট করার পর ডিভাইসের ওয়ারেন্টি স্থগিত করার পেছনে প্রধাণ কারণটি হচ্ছে রুট অ্যাকসেস এর মাধ্যমে ডিভাইসের বেশ বড় রকমের ক্ষতি করা সম্ভব। তবে ভয় নেই, রুট করার সাথে সথেই ক্ষতি হয়ে যাবেনা, তবে আনরুট অবস্থায় কোনওভাবেই সম্ভব নয় এমন ক্ষতি করার উপায় তৈরি হবে। অতএব রুট করার আগে অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েডের সবটাই বেশ ভাল করে বুঝে নেয়া উচিৎ।

এবার দেখা যাক রুট আসলে কি। যারা লিনাক্স চালিত কম্পিউটার বা ম্যাক ব্যবহার করেন তাঁদেরকে রুট বোঝানোর নতুন কিছু নেই। যাদের উইন্ডোজ নিয়ে মোটামোটি ধারণা রয়েছে তারা জানেন পিসির সিস্টেম ফাইল সমূহ ডিলিট বা বদলাতে হলে অ্যাডমিনিস্ট্রের পাওয়ার দরকার হয়, গেস্ট বা সাধারণ ব্যবহারকারী সেগুলো বদলাতে পারেন না। এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অ্যাকাউন্টকেই রুট অ্যাকসেস বলা হয়। সাধারণত ফ্যাক্টরী থেকে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারকারীদের সাধারণ ইউজার পর্যায়ই অ্যাকসেস দেয়া হয় যাতে সিস্টেম ফাইল ডিলিট বা মডিফাই না করতে পারেন। নবীশ ব্যবহারকারীদের হাতে সিস্টেম ফাইল ডিলিট হয়ে গেলে বিশাল সমস্যা হতে পারে, যার ফলে ফোন বুট না করা থেকে শুরু করে সিস্টেম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাটিকে বলা হয় ব্রিক।

আবার যদি বুঝে শুনে রুট অ্যাকসেস ব্যবহার করা হয় তাহলে বেশ অনেক কিছু করা সম্ভব যা বেশ চমকপ্রদ, যেমন:

– কিছু কিছু ফোনে প্রসেসরের গতি কমানো থাকে, সেটি বাড়ানো সম্ভব
– ফায়ারওয়াল বসিয়ে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট বন্ধ করা
– ডিভাইসের কার্নেল বদলে ফেলা, বুট অ্যানিমেশন বদলানো, ফন্ট পরিবর্তন
– অপ্রয়োজনীয় সিস্টেম অ্যাপ সরিয়ে ফেলা, অ্যাপের সিস্টেম ফাইল সমূহ ব্যাকাপ রাখা
– পার্ফরমেন্সের বেশ কিছু সেটিংস পরিবর্তন, ও
– এমনকি পুরো অপারেটিং সিস্টেমটিই বদলে ফেলা
– অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও অন্যান্য লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম চালানো (ভার্চুয়ালাইজেশন বা chroot+vnc এর মাধ্যমে)



তবে এসকল কাজের জন্য অন্যান্য ফাইল বা অ্যাপের প্রয়োজন, শুধু রুট করলেই করা যাবেনা তবে রুটের মাধ্যমে এই কাজগুলো করার উপায় তৈরি হবে। রুট অ্যাকসেস পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। সবচাইতে সহজ উপায় হচ্ছে ফোনটির বুট-লোডার আনলক করে সরাসরি সিস্টেমে রুট অ্যাকসেসের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইলসমূহ পুশ করে দেয়া। তবে এটি করার জন্য ফোনটির নির্মাতার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে, ওয়ারেন্টি সাথে সাথে শেষ হয়ে যাবে। অন্য আরেকটি উপায় হচ্ছে কোনও হ্যাকের মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেমটিকে কম্প্রোমাইজ করে সিস্টেমে রুট অ্যাকসেসে প্রয়োজনীয় ফাইল পুশ করে দেয়া। এর মাধ্যমে নির্মাতা সাথে সাথেই রুট সম্পর্কে জানতে পারবেনা, পরে আনরুট করে ওয়ারেন্টি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। কিছু নির্মাতা আনলক করার উপায় না দেয়ায় সেসব ফোন রুটিং এ হ্যাকের আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না। প্রতিটি ফোনের বা অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণের জন্য এক্সপ্লয়েট আলাদা আলাদা তাই রুটের সিস্টেম ও আলাদা আলাদা।

আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনার রুট সম্বন্ধে ধারণা কিছুটা হলেও পরিষ্কার হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আরও জেনে তবেই কাজটি করা উচিৎ, আর মেনে নিতে হবে রুট করার সময় কিছুটা রিস্ক নিতেই হবে। এ ব্যাপারে XDA বা অন্যান্য সাইটে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top