সকল মেনু

আর নয় নারীর প্রতি সহিংসতা- আসুন প্রতিরোধ করি, প্রতিরোধ গড়ি

হটনিউজ ডেস্ক: অধিকার সচেতন কর্মীদের জোট উদ্যমে উত্তরণে শতকোটি (ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং) আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারী বৈশ্বিক
প্রচারাভিযান “ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং ফর জাস্টিস” পালন করতে নারী-পুরুষদের একত্রিত করে জেগে উঠতে, বেরিয়ে এসে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ করার আহবান জানাচ্ছে। বাংলাদেশে, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বেলা ২টা থেকে জেগে উঠেছে। এছাড়াও একই সময় দেশের ৬৬টি জেলায় সম্মিলিতভাবে এ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের সামনে এ জাগরণ অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি দেশের উপজেলা, ইউনিয়ন সহ অন্যান্য স্থানে আদালতের সামনে এ জাগরণ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে এ জাগরণে অংশ নিতে ও সংহতি প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছি। লাল রঙ এর পোষাক পরিধান ছিল প্রতিবাদের অংশ এবং প্রতিটা বাড়ি, কর্মস্থল ও অন্যান্য স্থাপনায় লাল কাপড় উত্তোলনের আহবান করা হয়েছিল। দেশব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানস্থলে নারীর প্রতি অবিচারের এ তিনটি উদাহরণ, যেমন: কল্পনা চাকমা অপহরণ, মনিরামপুরে ধর্ষনের ঘটনা ও সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের ওপর আক্রমন, বিভিন্ন নাটিকার মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়। এ ধরনের অবিচারের ঘটনায় ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় ওবিআর ঘোষণা পাঠ করা হয়েছে। এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য স্থানের প্রতিবাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ১৪ই ফেব্রুয়ারীতে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের গে ও পরে ‘ফ্ল্যাশ মব’ আয়োজিত হয়েছে।  গত বছর ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিশ্বের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে একাত্ম হয়ে দক্ষিণ এশিয়া নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে জেগে উঠেছিল। বাংলাদেশের ৩০০টি সংস্থার প্রায় ৩০ লাখ নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে পথে নেমে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং ফর জাস্টিস সহিংসতা জয়কারী নারী ও যারা তাদের ভালবাসে তাদের জন্য একটি বৈশ্বিক আহ‌বান। এর মাধ্যমে তারা আদালত প্রাঙ্গন, পুলিশ স্টেশন, সরকারী অফিস, স্কুলের প্রশাসনিক ভবন, কর্মস্থল, বাসা, অথবা জনসমাগম স্থলে একত্রিত হবে, যে সব জায়গায় তারা ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে। এই স্থানগুলোতে তাঁরা ন্যায়-বিচার ও নিরাপত্তা পাওয়ার কথা থাকলেও প্রায়ই তাঁরা তা পান না। সহিংসতা জয়কারী সারভাইভার নারীদের জন্য এটি শিল্প, নাচ, মার্চ, গান, নিজস্ব অভিজ্ঞতা অথবা তাঁদের পছন্দমত যে কোন উপায়ে রাজনৈতিকভাবে, আত্মিকভাবে, ক্ষোভের সাথে নিরবতা ভেঙ্গে তাঁদের গল্প বলার আহ‌বান। ১৪ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ওবিআর বাংলাদেশ নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে ও যে শর্তগুলোর কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা চলতেই থাকে সে সবের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরিতে নানা ধরনের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। দেশব্যাপী এ প্রতিবাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতার প্রতিবাদ করা। বিশ্ব ভালবাসা দিবসে এ
প্রতিবাদ আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দিবসটির বানিজ্যিকীকৃত অবস্থায় পরিবর্তন আনা এবং নারীকে সম্মানিত ও ভালবাসার মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। বাংলাদেশে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং এর সমন্বয়কারী খুশি কবীর ১৪ই ফেব্রুয়ারীতে সহিংসতা রোধে জাগরণের দিন পালনের উদ্দেশ্য ব্যাখা করতে গিয়ে বলেন, “আমরা চাই সবাই এ দিনে প্রতিজ্ঞা করুক তারা শুধু তাদের ভালবাসার নারীদের ফুল দিবে না বরং তারা এটাও নিশ্চিত করবে যেন এ নারীরা কোন ধরনের সহিংসতার শিকার না নয়। এ ধরনের শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ হতে হবে। অনেক হয়েছে, এখন সময় নারীর প্রতি সহিংসতার ন্যায়বিচার দাবির।“বাংলাদেশের নারী অধিকার আন্দোলন বর্তমান সময়ে বেশ কিছু অর্জন নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ প্রতিবাদ আন্দোলন কাজকে আরো বেশি জোরদার করবে যেন সহিংসতাকে জয়কারী সারভাইভার এবং তাদের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অবিচার নিয়ে কথা বলে এবং তারা যেন কোন ভাবেই ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়। ১৪ই ফেব্রুয়ারী শেষ নয় বরং শুরু মাত্র এবং নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সর্বোপরি বিচার ব্যবস্থার ভবিষ্যতের আলোচনা ও কর্মপরিকল্পনার দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। ওবিআরের সদস্য সংগঠনগুলো এ প্ল্যাটফর্মকে ব্যাবহার করে নারীর বিরুদ্ধে যে কোন অবিচার রোধে তাদের প্রচেষ্টাগুলোকে একত্রিকরণ ও সমন্বয় করবে এবং বিভিন্ন কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, অ্যাডভোকেসি’র মাধ্যমে বৈষম্যমূলক প্রয়াস ও আইনকে চ্যালেঞ্জ করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top