সকল মেনু

বিপিএলের ভবিষ্যৎ কী!

ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি : টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেটের প্রাণ হলেও একদিনের ক্রিকেটের প্রচলন হওয়ায় জনপ্রিয়তা কমতে থাকে টেস্টের। ক্রিকেটের সর্বশেষ ফরম্যাট টি-টোয়েন্টির প্রচলন হওয়ার পর একদিনের ক্রিকেটকে পেছনে ফেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে যায় সেটা।

এখন ক্রিকেট বাণিজ্যের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎসে পরিণত হয়েছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। সেটাকে পুঁজি করে ভারত চালু করেছে আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ)। অন্যান্য দেশেও অনুরুপ লিগ চালু হয়েছে। বাংলাদেশে চালু হয়েছে বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ)।

বিপিএলের প্রথম আসর থেকে বেশ ভালো আয় হয়। সমালোচনা হয় আয়োজকদের নানান ত্রুটি নিয়ে। রয়েছে দেশী-বিদেশী খেলোয়াড়দের টাকা না পাওয়ার অভিযোগও। কিন্তু তারপরও মাঠে গড়ায় বিপিএলের দ্বিতীয় আসর।

তখন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহাবাগ উত্তাল ছিল। ছিল বই মেলায় আয়োজন। ফলে খেলা দেখতে মাঠে দর্শক কিছুটা হলেও কম ছিল। তবে সবচেয়ে বড় যে ধাক্কাটা খায় সেটা হল-বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর বিষয় নিয়ে। সেটার কারণে এমন এক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল যে বিপিএলের তৃতীয় আসর মাঠে গড়ানোটা এক প্রকার অনিশ্চিত হয়ে পরে।

কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চলতি বছরের মে মাসে বিপিএল আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু আইসিসির সিঙ্গাপুর সভার পর শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশেও ভেন্যু হচ্ছে আইপিএলের (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের)। বিষয়টি বিসিবি ইতিবাচকভাবে দেখলেও অনেকেই বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে দেখছেন।

তাদের মতে আইপিএল বাংলাদেশে হওয়া উচিত নয়। কারণ আইপিএল বাংলাদেশের হলে সেটার নেতিবাচক প্রভাব বিপিএলের উপর পড়বে। বাংলাদেশ আইপিএলের ভেন্যু হলে যা লাভ হবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাভ হবে আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিদের। পাশাপাশি তারা পাবে আন্তর্জাতিক পরিচিতি।

বিপিএলের ভবিষ্যত এবং বাংলাদেশে আইপিএলের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।

সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘বিপিএলের ভবিষ্যত ভালো। ব্যর্থতা থাকতে পারে। সেটাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। বাংলাদেশে ক্রিকেট ফ্যান অনেক বেশি। আইপিএল বাংলাদেশে হওয়া উচিত না। বিপিএলকে নিয়েই আমাদের এগোনো উচিত।’

বিসিবির সাবেক পরিচালক সিরাজ উদ্দিন মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘প্রথমবার সীমাবদ্ধতা ছিল। ফলে সেভাবে পুরোপুরি সফল হইনি। তারপরও ৩২ কোটি টাকা রাজস্ব এসেছে। দ্বিতীয় বছরও কিছু ভুল হয়েছে। প্রথম বছরের ভুলগুলো সংশোধন করা উচিত ছিল।’

ঢাকা গ্লাডিয়টর্সের মালিক সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘বিপিএল না হওয়ার কারণ নেই। আইপিএল থেকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেটের উত্থান। আমাদের মাত্র দুই বছর হল। কিছু ভুল ত্রুটি থাকবে। সামনে আগালে ভালো হবে। বিপিএল আয়োজনে বিসিবির সদিচ্ছার কমতি নেই।’

ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) বাংলাদেশে বিপিএল আয়োজনের বিষয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভারতী ক্রিকেট বোর্ড হচ্ছে আমাদের বড় ভাই। ছোট ভাইয়ের ক্ষতি হোক এমন জিনিসি তো তারা চাইবে না।’

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আফজালুর রহমান সিনহা বলেন, ‘আইপিএলের ম্যাচ বাংলাদেশে আয়োজনের বিষয়ে বিসিবি লাভ-ক্ষতির হিসেব করে দেখবে। এটা যদি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য থ্রেট হয় তাহলে অবশ্যই তারা আইপিএলের ম্যাচ বাংলাদেশে আনবে না।’

ক্রীড়া সাংবাদিক শাহীদুজ্জামান বলেন, ‘বিপিএল বর্তমানে লন্ড্রিতে রয়েছে। পরিস্কার হয়ে বের হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন অনেক দূর এগিয়েছে। আইপিএলের ম্যাচ ঢাকায় হলে প্রচুর দর্শক হবে। কিন্তু আয় যা হবে আইপিএলের হবে। বিসিবির স্বার্থ রক্ষা করে এখানে আইপিএলের ম্যাচ হওয়া উচিত।’

একজন দর্শক হিসেবে কণ্ঠশিল্পী হামিন আহমেদ মনে করেন না বাংলাদেশে আইপিএলের ম্যাচ হওয়া উচিত। তার মতে বাংলাদেশের ক্রিকেট ফ্যানের সংখ্যা ভারতের কাছাকাছি। ফলে বাংলাদেশ এখন ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে বড় মার্কেট। এই মার্কেট থেকে বিপিএল ভবিষ্যতে প্রচুর আয় করতে পারবে। আইপিএলের ম্যাচ বাংলাদেশে হলে বিপিএলের উপর সেটার খারাপ প্রভাব পড়বে।

সূত্র : একাত্তর সংযোগ, ৭১ টেলিভিশন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top