সকল মেনু

আদিবাসী নারীদের অলংকার সততা আর নিষ্ঠা

 নওগাঁ প্রতিনিধি , ৪ ফেব্রুয়ারি :  নেই আধুনিক শিক্ষা, নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট, আছে শুধু সততা আর নিষ্ঠা। এই তাদের সম্বল, এই-ই অলংকার। আর আছে শুধু এগিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা। বাংলার মহিয়সী নারীদের যুগ যুগান্তর ধরে এভাবে অনেক বীরত্ব লেখা হয়েছে। কিন্তু যাদের বিরামহীন শ্রম ও ঘামের উপরে দাঁড়িয়ে অর্থের পাহাড় গড়ছে বিত্তশালীরা, সেই সব শোষিতের কথা খুব কম লোকই জানে। হ্যা, বাংলার আদিবাসী নারীদের কথা বলছি। বরেন্দ্র অঞ্চলে নওগাঁর সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও মহাদেবপুর এলাকায় ফসল উৎপাদনে মহাজনের কাছে সস্তা শ্রমিক হিসাবে এদের খুব কদর। কম দামে মেলে এদের শ্রম, এজন্য মহাজন বেছে নেয় আদিবাসী নারীদের। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা কাজ করে এসব আদিবাসী নারী শ্রমিকরা। কখনো কাজের ফাঁকি দেয় না বলে মহাজনদের কাছে তাদের একটু আলাদা কদর রয়েছে। কিন্তু প্রারিশ্রমিক প্রদানে রয়েছে ব্যাপক ফারাক। পুরুষ শ্রমিকদের যেখানে প্রদান করা হয় ১৫০ টাকা সেখানে নারী শ্রমিকদের ১০০ টাকা। প্রারিশ্রমিক বৈষম্য থাকলে ও নেই শ্রমের কোনো বৈষম্য। সারা দিন কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে এসব নারীরা সংগ্রহ করে রান্না করার জন্য জ্বালানী। আবার যদি কোনো ডোবানালা দেখে, সেখানে দল বেঁধে নেমে পড়ে মাছের সন্ধানে। উদ্যমী নারীদের হাতে ধরা দেয় ছোট ছোট মাছ। এর পর আবার এগিয়ে চলা, স্থানীয় কোনো হাট থেকে চাল ডালসহ প্রয়োজনীয় তরকারী কিনে তারা ফেরে বাড়িতে। বাড়ির পুরুষ মানুষটি হয়ত সে সময় পচানী (নেশা জাতীয় খাবার) খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে রয়েছে ঘর সংলগ্ন পাশের কোনো আঙ্গিনায় । এ ভাবে নেশার অতলে হারিয়ে যাওয়া আদিবাসী গোষ্টীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে হবে সমাজের শিক্ষিত সমাজকে। সেই সাথে সংগ্রামী নারীদের হাত সদ্যব্যবহারে এগিয়ে দিতে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে সুধী মহলের। এটাই প্রত্যাশা এসব আদিবাসীদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top