সকল মেনু

বাড়ছে খাদ্য উৎপাদন কৃষিজমি কমলেও

 আফিফা জামান,ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি :  দেশে খাদ্যচাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। অন্যদিকে ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট, শিল্পায়ন, নগরায়ণ, নদীভাঙন ও নানাবিধ অবকাঠামো নির্মাণের ফলে কৃষিজমি কমছে। এর পরও বিগত কয়েক বছরে চালের উৎপাদন তিন গুণ বেড়ে বর্তমানে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ টনে উন্নীত হয়েছে।

কৃষিবিদ ইব্রাহিম খলিল রাইজিংবিডিকে জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ভূমির উর্বরাশক্তি হ্রাস, মাটিতে জিঙ্ক, সালফার ও বোরনের ঘাটতি, আধুনিক কৃষি-যন্ত্রপাতির স্বল্পতা, ভূগর্ভস্থ পানির অপ্রতুলতা, বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের কৃষকরা জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন অবিরাম সংগ্রাম করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাচ্ছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে কৃষক-পরিবারের সংখ্যা ১ কোটি ৪৭ লাখ ১১ হাজার। দেশে আবাদি জমির পরিমাণ ৮ মিলিয়ন হেক্টর। এর মধ্যে একফসলি জমি ২.৭৪৭ মিলিয়ন হেক্টর, দ্বিফসলি জমি ৩.৯২ মিলিয়ন হেক্টর এবং তিন ফসলি জমির পরিমাণ ১.২৮ মিলিয়ন হেক্টর। চলতি পতিত জমি ০.৪৭৪ মিলিয়ন হেক্টর। মোট আবাদি জমির ৫৫ শতাংশ জমি সেচের আওতাধীন। আবাদকৃত প্রধান প্রধান ফসলের মধ্যে ধান, গম, ভুট্টা, পাট, আলু এবং সবজি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে আবাদি প্রায় ৭৫ ভাগ জমিতে ধান ফসলের চাষ হচ্ছে।

সুত্র জানায়, পরিবর্তনশীল জলবায়ু ও প্রতিকূলতার সঙ্গে খাপ খাওয়ার উপযোগী বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন করেন দেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন ফসলের মোট ১৪৫টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চারটি নতুন জাতের গম, হাইব্রিড জাতের ভুট্টা দুটি, আলুর ১৭টি, ডাল ফসলের চারটি, তেল ফসলের চারটি, শাকসবজির ১৮টি, ফলের ১৮টি, মসলা ফসলের পাঁচটি, ফুলের ১৩টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট খরা, লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা-সহিষ্ণু ১২টি ও দুটি হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ধানের সাতটি, মসুর ডালের চারটি, মুগ ডালের একটি, ছোলার চারটি, টমেটোর পাঁচটি, সরিষার দুটি, তিল ফসলের দুটি, সয়াবিনের চারটি ও চিনাবাদামের দুটি উচ্চফলনশীল নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে।

বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট তিনটি উন্নত মানের আখের জাত উদ্ভাবন করেছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড থেকে একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মো. আবু হানিফ মিয়া রাইজিংবিডিকে জানান, দেশে ফসল উৎপাদনে শস্যের নিবিড়তা ও বহুমুখীকরণ বেড়ে গেছে। ফলে কৃষি অতীতের ভরণপোষণ পর্যায় থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে সংযোজিত হচ্ছে যান্ত্রিকীকরণ। চাষিরা তাদের নিজেদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য শহরের অভিজাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সাপ্লাই করে অধিকতর লাভবান হচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বাংলাদেশের কৃষি দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top