সকল মেনু

ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া পুলিশ সদস্যদের শনাক্তে কাজ চলছে

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক ভূমিকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা বা সদস্যদের শনাক্তে কাজ চলছে। এটা করতেই হবে। পুলিশ বাহিনীর জন্যই করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় পুলিশ সদর দপ্তরের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

ছাত্র-জনতার বিপক্ষে কতজন পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্য জড়িত ছিল? তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, এটা তো তদন্ত সাপেক্ষ। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে অনেক মামলা হয়েছে। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেকে নির্দোষ কিন্তু আসামি হয়েছেন। আবার অনেকে দোষী কিন্তু শনাক্ত হয়নি বলে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

আইজিপি বলেন, ২ লাখ ১৩ হাজার পুলিশের কতজন বিপক্ষে ছিল তা খুঁজে বের করা সত্যিই কঠিন। তবে এটা করবোই। এটা করতেই হবে। পুলিশ বাহিনীর জন্যই করতে হবে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, সমাজকে একটি সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সদস্যদের সঠিক কার্যক্রমের মাধ্যমেই জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। জুলাই-আগস্টে পুলিশের কিছু সদস্য বাড়াবাড়ি করেছেন, আইনভঙ্গ করেছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। ৫ আগস্টের পর পুলিশ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

এসময় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদসহ পুলিশের পলাতক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোথায় আছেন এখনো তা শনাক্ত করা যায়নি বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই শীর্ষ কর্তা।

বাহারুল আলম বলেন, এ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আমার প্রধান দায়িত্ব। পুলিশের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে। জনগণের সঙ্গে বিনয়ী ব্যবহার করতে হবে। সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশকে জনবান্ধব করতে হবে।

তিনি বলেন, রাজারবাগে প্রথম যে-সব পুলিশ সদস্য প্রথম বিদ্রোহ করেছিল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে তাদের যেমন দাবি, তেমনি আমাদের প্রত্যেকের দাবি, পুলিশকে রাজনীতি থেকে রাজনৈতিক ব্যবহার থেকে মুক্ত করতে হবে। এটা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা, পরামর্শ সুপারিশ গেছে সংস্কার কমিশনের কাছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পুলিশ বাহিনীকে যেন আর ব্যবহার করা না হয়। আর এটা সম্ভব এই সরকারের পক্ষেই।

বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা? সামনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে নিরাপত্তায় পুলিশ প্রস্তুত কিনা জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, এখন বাহিনীকে সক্রিয় ও সদস্যদের মধ্যে কাজের স্পৃহা তৈরি করা হচ্ছে। সামনের সপ্তাহ থেকে বিভাগে বিভাগে সফর করবো। ফোর্সের সদস্যদের হতাশা, চাওয়া-পাওয়ার কথাগুলো জানতে চাই। কারণ তাদের মধ্যেও অনেক ক্ষোভ আছে।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের স্টেপে যেতে পারিনি। আমি এতোটুকু ব্লাঙ্ক চেক দিতে পারি যে, দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশি সাহায্য করার মতো পূর্ণ ক্ষমতা আমাদের আছে। এর আগে কেয়ারটেকার সরকারের আমলে তিনটা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে দেখেছেন আমরা পারি। সেই পুলিশের অনেকে এখনো আছেন, কিছু পরিবর্তন, নতুন এসেছে। আমি মনে করি পুলিশ খুব ভালোভাবে সক্ষম।

যে-সব পুলিশ সদস্য আন্দোলনে মারা গেছেন তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের চেষ্টাও করা হচ্ছে। আইনি আশ্রয় পুলিশ নেবে কি না, আইনি আশ্রয় না নিলে পুলিশের মনোবলে ঘাটতি তৈরি হতে পারে কিনা। জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, আইন তো সবার জন্যই সমান। হত্যাকাণ্ড বা যে কোনো অপরাধ। আইনের আওতায় আদালতের বিচারের আওতায় আসা উচিত। আমরা সেভাবেই করবো। সেভাবেই হয়ে আসছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top