সকল মেনু

‘৩২ বছর নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করছি, কিন্তু পরিবর্তন পাচ্ছি না’

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, সরকার ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে সড়কের নিরাপত্তা। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু সড়কে বিশৃঙ্খলা থেকে শৃঙ্খলা ফেরতের কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সংগঠনটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, নিজের পয়সা আর শ্রম দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নিসচা। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে আমরা এ কাজ করছি। সড়ক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করছে সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার উপর। আমরা সবসময় সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছি। এটি একটি জাতীয় ইস্যু। মানুষ সড়কে জীবন দিচ্ছে। এই ইস্যুতে সব দলকে এক হতে হবে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাকে সব সময় একটি ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। অতীতে আমি বিএনপির কাছে গেলে বিএনপির ট্যাগ, জামায়াতের কাছে গেলে জামায়াতের ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হতো। ৩২ বছর ধরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু সড়কে বিশৃঙ্খলা থেকে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। আজকে যিনি সড়ক উপদেষ্টা রয়েছেন, তিনিও এ সেক্টরে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত সাড়ে তিন মাসে সড়কের নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ করেনি। যেভাবে করা দরকার সেভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ হচ্ছে না। অন্তর থেকে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলন এখন সময়ের দাবি। ইলিয়াস কাঞ্চন তার প্রচেষ্টায় সারা বাংলাদেশে আন্দোলন করছেন। সড়ক নিরাপত্তায় রাষ্ট্রীয় একটি চিন্তা দরকার। কিন্তু তেমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উল্টো ইলিয়াস কাঞ্চনকে হেনস্তা করা হয়েছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন, বিআরটি’র সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে যুক্ত। ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট এগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে। এগুলো নিয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সড়ক নিরাপত্তায় চার সুপারিশ জামায়াতের

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুর রহমান মাসুদ বলেন, নিরাপদ সড়ক বিনির্মাণের নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। নিরাপদ সড়কের জন্য দরকার নিরাপদ রাষ্ট্র, নিরাপদ শাসক, নিরাপদ সড়ক। সড়কে বাসের নিচে জীবন দিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

বক্তব্যে তিনি সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারটি সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে —

১. নাগরিক শ্রেণির মধ্যে মূল্যবোধের জন্ম দিতে হবে।

২. ব্যক্তিকে নয়, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালকদের লাইসেন্স দিতে হবে।

৩. কোনো চালক ভুল করলে তাকে নয়, প্রতিষ্ঠানকে ধরতে হবে।

৪. মানবিক মূল্যবোধের মর্যাদা সৃষ্টি করতে হবে এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে ইলিয়াস কাঞ্চনকে প্রধান করে কমিশন গঠনের প্রস্তাব জানান নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আজাদ।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top