ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রয়েছে। কিন্তু ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এটা বৈষম্য। এই বৈষম্য নিরসন করা প্রয়োজন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত ‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো লালন করতে না পারি তাহলে আগামী দিনে এদেশে ইসলামি শিক্ষার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাঁচ হাজার ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্তকরণের ঘোষণা দিলেও নানা কারণে সেটা বাস্তবায়িত করা হয়নি। তিনি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ফোরামের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।
ড. খালিদ বলেন, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ধর্ম মন্ত্রণালয়াধীন নয়, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। তিনি ফোরামের নেতাদেরকে তাদের দাবির বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এছাড়া, উপদেষ্টা তার পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করার বিষয়ে ফোরামের নেতাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
ড. খালিদ আরো বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক মুসলমান। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। ধর্ম চর্চা, ধর্ম পালন ও ধর্ম প্রচার সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, এদেশের পাঠ্যক্রমে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ঈমান, আকিদা, কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটা না হলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্ম শিখবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ঠিক একইভাবে মুসলমানদেরকে তাদের কুরআন, সুন্নাহ, ঈমান, আকিদা সম্পর্কে শিক্ষা লাভের অধিকার থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, অতীতে এদেশে বারবার ইসলামী শিক্ষাকে সংকুচিত করার চক্রান্ত করা হয়েছে। এ চক্রান্ত আগামীতে চলবে না।
এতে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ মাসউদুর রহমান তালুকদার। আলোচনা সভায় ফোরামের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোকে জাতীয়করণসহ সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য ও বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেসিনের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল মোমেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খান ও জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।