বাঙালি মুসলিমের একটি বহুল পরিচিত ঐতিহ্য রয়েছে। কেউ মারা গেলে চল্লিশতম দিনে দোয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে থাকে খাবারও। এরকম আয়োজনকেই ‘চল্লিশা’ বলা হয়। রীতি অনুযায়ী এটা সবখানেই পালন করা হয়। চল্লিশা মূলত শোক পালনের উদ্দেশে পালন করা হলেও এবার ব্যতিক্রমী চল্লিশা ‘উদযাপন’ করল মিরপুরবাসী। তবে তা কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য নয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পতনের চল্লিশ দিন উপলক্ষ্যে এই চল্লিশার আয়োজন করা হয়। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বৈরাচারের চল্লিশা’।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে আজমল হাসপাতালের গলিতে এই চল্লিশার আয়োজন করে মিরপুরবাসী।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অভেদ্য দুর্গ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর। শুধু মিরপুরেই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে ছাত্র-জনতাসহ নানা শ্রেণি-পেশার শতাধিক নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বৈরাচারের চল্লিশা উপলক্ষে গরু জবাই ও বিরিয়ানী রান্না করা হয়। একই সঙ্গে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে এলাকাবাসীসহ সকলের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। আরো উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরিচিত মুখ মো. নাহী, মাসুদুর রহমান, ফারদিন হাসানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী, শ্রমিক, দিনমজুর ও এলকাবাসী।
চল্লিশার আয়োজক মো. হাবিবুর রহমান জানান, আন্দোলনে এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল, বিশেষ করে আজমল হাসপাতালের এই গলিতে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে এই এলাকা হয়ে ওঠে এক অভেদ্য দূর্গ ও আন্দোলনকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তাই আজ স্বৈরাচার পতনের চল্লিশ তম দিনে আমরা বাঙালি মুসলিমের ঐতিহ্য অনুযায়ী চল্লিশা পালনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর অবদানের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তাদের আপ্যায়নের একটা চেষ্টা করলাম।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের ফলে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গঠন হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।