ভালোবাসার মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে চিঠি দিয়েছেন এক নারী। শনিবার (১৭ আগস্ট)দানবাক্সগুলো খোলা হলে টাকা স্বর্ণালংকারসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়। এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি চিঠিও মেলে।
পছন্দের মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে দানবাক্সে দেওয়া চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম- হে আল্লাহ সকল প্রশংসা শুধু তোমার জন্য। হে আল্লাহ আমি একটা ছেলেকে খুব ভালোবাসি কিন্তু সে আমাকে ভালোবাসে না! হে আল্লাহ তুমি তো দয়ালু, তাই আমি তোমার কাছে ভিক্ষা চাই মালিক। আমি তাকে হালাল ভাবে নেককার জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই তোমার কাছে আল্লাহ পাক, আল্লাহ তুমি তাকে যেনো আমার জীবন জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করো। সবাই দয়া করে আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যাতে তাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে দান করে। দোয়া করবেন।’
এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে ৯টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়। ৩ মাস ২৬ দিন পর সকাল সাড়ে ৭টায় এ দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এতে মিলে রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা। এছাড়াও মিলেছে স্বর্ণালংকারসহ বৈদেশিক মুদ্রা।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ৩ মাস ২৬ দিন পর শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। এবার দিন বেশি হওয়ায় একটি ট্রাংক দেওয়া হয়েছিল। পরে মসজিদের দোতালায় এনে টাকা গণনার কাজ চলছে।
টাকা গণনা কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী মহুয়া মমতাজ, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আনোয়ার পারভেজসহ মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ মোট ৩৫০ জনের একটি দল অংশ নিয়েছেন।
এর আগে, সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছিল। ২২০ জনের একটি দল দীর্ঘ সাড়ে ১৮ ঘণ্টায় এ টাকা গণনা কাজে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।