সকল মেনু

সেতু ভেঙে বিয়ের মাইক্রোবাস খালে, নিহত ১০

বরগুনার আমতলীতে একটি ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ সেতু ভেঙে বরযাত্রীবাহী দুটি গাড়ি খালে পড়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এবং ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের উদ্ধার করার জন্য ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, ডুবুরি ও স্থানীয় মানুষ কাজ করছেন।

শনিবার (২২ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন ও চাওড়া ইউনিয়নের ব্রিজ হলদিয়া হাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে ভাগ্নির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে শনিবার দুপুরে ছেলের বাড়িতে আসার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সবাই নারী এবং শিশু। বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় এলাকা জুরে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতের ১০ জনের মধ্যে ৭ জন শিবচর মাদরীপুরের বাসিন্দা এবং ২ জন স্থানীয় গুরুদল গ্রামের। আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মনির হাওলাদারের মেয়ে হুমায়রা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। ওই অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে শনিবার দুপুর দেড় টার সময় তারা মাইক্রো যোগে আমতলী আসছিল। পথিমধ্যে মাইক্রেটি হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার সেতু পার হওয়ার সময় মাঝ বরাবর ভেঙে কচুরিপানায় ভরা খালে তলিয়ে যায়। মাইক্রোবাস পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে। মুষলধারে বৃষ্টি এবং খালে নেমে উদ্ধারের কোনো সুযোগ না থাকায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব ঘটনায় অনেকেই তখন পানিতেই প্রাণ হরান। মাক্রোবাসটি পানির উপরে তোলার পর একের পর এক বেড়িয়ে আসে নারী-শিশুসহ ৯টি লাশ। ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৩ জন।

উদ্ধার হওয়া লাশ হলো শিবচর মাদরীপুরের মুনী বেগম (৪০), তার ছোট মেয়ে তাহিয়া (৭), বড় মেয়ে তাসফিয়া (১১), একই এলাকার ফরিদা বেগম (৫৫), রাইতি (৩০), ফাতেমা আক্তার (৪০), রুবী বেগম (৪০), হলদিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে হৃদি (৫), তার মা জাকিয়া বেগম (৩০)। জীবিত উদ্ধার হওয়া ৪ জন হলেন মাহবুব খান, সোহেল খান, সুমা আক্তার ও দীশা আক্তার তারা সবাই শরিয়তপুরের বাসিন্দা।

জীবিত উদ্ধার হওয়া মাহবুব খান বলেন, মাইক্রোবাসটি লোহার সেতুর মাঝ বরাবর আসার পর আকস্মিক ধসে কচুরিপানায় ভর্তি খালে ডুবে যায়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আল্লায় মোগো বাঁচাইলেও সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। নিখোঁজদের উদ্ধার করতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা কাজ করছেন।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ার ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মাইক্রোবাসটি এখনও পানির নিচে।

ঘটনাস্থলে আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ছরোয়ার ফোরকান, সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মিয়া, আমতলী থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বরগুনার সংসদস্য সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বিকালে আমতলী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top