সকল মেনু

ঈদে ফাঁকা ঢাকা, চিন্তায় হতদরিদ্র মানুষ

ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হলেও খুশি নেই ঢাকার ফুটপাতের বাসিন্দারা। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে লাখো মানুষ রাজধানী ছেড়ে চলে যাওয়ায় ঢাকা মহানগরীতে যে নীরবতা তৈরি হয়েছে তাতে অন্ধকার দেখছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, সাধারণত ঢাকায় অন্যান্য সময়ে অনেক লোক সমাগম থাকে, তাদের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যায়। বিভিন্ন কাজের সুযোগ থাকে, অনেক সময় ফুটপাতে টুকটাক বেচাকেনা হয়। কিন্তু এই ঈদের লম্বা ছুটিতে এসব বন্ধ। যে কারণে খাওয়া-দাওয়াসহ নানান সমস্যা তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এবারের ঈদুল ফিতরে ছয়দিনের ছুটিতে অনেকটাই ফাঁকা রাজধানী ঢাকা। তবে রাস্তার পাশে, ফুটপাতে, পার্কে যাদের থাকা- খাওয়া-ঘুম হয় তারা রয়েছেন। প্রতিদিনকার মতোই কাটছে তাদের ঈদের দিন। রাস্তার পাশে থাকা পরিবারগুলোর শিশুরা পথচারীদের কাছে চাচ্ছে সাহায্য। ঈদকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যের হাত।

ছিন্নমূল শিশুদের কারও কারও শরীরে নতুন জামা দেখা গেলেও অনেকের ভাগ্যে জোটেনি। এসব ভাসমান পরিবারের প্রধানের কাছে ঈদ মানে যেন অন্ধকার। কেননা ঈদ উৎসবের তার পরিবারের শিশুদের যে বায়না থাকে তার অনেকটাই মেটাতে পারেন না তারা। যেখানে তাদের দিনের খাবার জোগাতেই অনেক কষ্ট, সেখানে ঈদের আনন্দে পরিবারের চাহিদা মেটাতে না পেরে উৎসবের দিনও তাদের কাছে বর্ণহীন।

ঢাকার বিত্তবৈভবের আড়ালে থাকা এসব হতদরিদ্র মানুষ জানান, প্রতিনিয়তই তাদের ব্যস্ত থাকতে হয় টিকে থাকার সংগ্রামে। এসব অসহায়ের মধ্যে অনেকে আছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আর বিত্তবানরা টাকা দিলেই তা দিয়ে খাবার কিনে খেতে হয়। এমনও দিন কাটে পানি খেয়ে।

খিলগাঁও রেললাইন এলাকায় পাওয়া যায় ছিন্নমূল দম্পতি রমিজ মিয়া এবং আছিয়া বেগমকে, পাশেই দেখা যায় তাদের চার বছরের শিশুসন্তান বৃষ্টিকে।

রমিজ মিয়া বলেন, ‘আমরা এখানেই থাকি। ঈদের সময় রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে। ঈদের সময় অনেকের ঘরে উৎসব থাকলেও আমাদের সেই উৎসব নেই। ভিক্ষা করে আমাদের জীবন চলে।’

তিনি বলেন, ‘সকালে শাহজাহানপুর গোরস্থানের সামনে দাঁড়াইয়া আছিলাম। ওইহান থ্যাইকা কিছু টাহা পাইছি। সাথে মেয়াডারে নিয়া গেছিলাম। কাইলক্যা (বুধবার) রাইতে গাড়ি দিয়া আইসা একটা ম্যাডাম মেয়াডারে একটা জামা দিয়া গেছে আর ৫০০ টাহা দিয়া গেছে।’

এসময় আছিয়া বেগম বলেন, ‘ভিক্ষা করে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু এভাবে কি আর চলে? ঈদের দিনে গোরস্থান থেকে এসে জামাই সেমাই ও আধা সের পোলাওর চাউল আনছে। তাই পাক (রান্না) করতাছি। এইটাই আমাদের ঈদ।’

পান্থ কুঞ্জ পার্কের সামনে পাওয়া যায় আব্দুল করিমকে। তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করে চলি। ঢাকায় এখন মানুষ নাই, আগের মতো ভিক্ষা পাই না। খাবারের জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top