সকল মেনু

‘ব্যয় কমিয়ে পণ্যের অবাধ চলাচল নিশ্চিতে হচ্ছে লজিস্টিকস নীতিমালা’

ব্যয় কমিয়ে আমদানি-রপ্তানি এবং স্থানীয় পণ্যের সহজ ও অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় লজিস্টিকস নীতিমালা, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা নিয়ে এর আগে বাংলাদেশে কোনো নীতিমালা হয়নি। অনেকদিন থেকে এটা নিয়ে দাবি ছিল। আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে লজিস্টিকস সাপোর্টের গুরুত্ব অপরিসীম। মোট ব্যয়ের একটা বড় অংশ এখানে আছে।

এ নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্ধারিত সময় বা স্বল্পতম সময়ে স্বল্পতম ব্যয়ে স্মুথলি যেন পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাটা নিশ্চিত হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন এবং কী কার্যক্রম গ্রহণ করলে এই সার্ভিসটা দেওয়া সম্ভব হবে, সে সংক্রান্ত একটি দিক-নির্দেশনা এ নীতিমালায় আছে।

তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। কাউন্সিল সামগ্রিক দিকনির্দেশনা দেবে। এছাড়া মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি সমন্বয় কমিটি থাকবে।

‘উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রপ্তানি পণ্য উৎপাদন স্থান থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত যাত্রাটি যেন বাধাহীন হয়, সেজন্য কী সহায়তা করা যায়- সেটার জন্য নীতিমালা করা হয়েছে। আগে এটি ছিল না, এটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে করা হলো।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, লজিস্টিকসের কিছু অবকাঠামো খাত আছে। আমাদের যোগাযোগের যে অবকাঠামো আছে, সেখানে আমরা সড়কনির্ভর হয়ে গেছি। সামনে রেল ও নৌপথ নির্ভরতা বাড়াতে যা যা করণীয়, তা করা হবে।

তিনি বলেন, এছাড়া জিপিএস ট্র্যাকিং ও কানেক্টিভিটি হাব, অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট জায়গায় একটি কানেক্টিভিটি হাব হবে। সেখানে পণ্য সরবরাহের জন্য ওয়ারহাউস (গুদামঘর) ও পণ্য যেন পঁচে না যায়, সে ব্যবস্থা করা হবে। নীতিমালায় রপ্তানিকে মুখ্য ধরা হয়েছে এবং স্থানীয় বাজারের কথাও বলা হচ্ছে। পণ্যের অবাধ যাতায়াতের জন্য যেসব অবকাঠামো দরকার সে বিষয়ে নীতিমালায় বলা আছে।

মাহবুব হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত সব নীতিমালা পরীক্ষা করে তা ব্যবসাবান্ধব করতে বলা হয়েছে। কোন সেবা ব্যক্তিখাতে আসবে, কোনটা পিপিপি হবে, কোনটায় সরকার বিনিয়োগ করবে, সে তালিকাও রয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন একটি বড় খাত, আমরা দেখেছি এখানে ১০৬ ধরনের পেশার কথা হয়েছে, সেখানে ৫২ ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণও রয়েছে। সর্বনিম্ন কত ঘণ্টার প্রশিক্ষণ হবে, তারও একটা বিধানের কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা পরিবেশবান্ধব করতে বলা হয়েছে। আমরা যেন টেকসই দৃষ্টিকোণ থেকে এটা করি। আর লজিস্টিকস খাতে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। কারণ, আমাদের রপ্তানি করতে হবে। রপ্তানি করার ক্ষেত্রে তারা সাংঘাতিকভাবে এগুলো যাচাই-বাছাই করে।

লজিস্টিকস খাতের কোন কোন সেবা পিপিপি, কোন কোন সেবা সরকারি আর কোন কোন সেবা বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে হবে, সেটা নীতিমালায় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ২১টি সেবা উপখাতকে চিহ্নিত করে কোন খাতে কারা কাজ করবেন সেটিও নীতিমালায় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, লজিস্টিকস চ্যানেলের ক্ষেত্রে কোথাও কোনো বাধার সৃষ্টি করা যাবে না। পণ্যের চলাচলটা যেন অবাধ হয় অর্থাৎ লজিস্টিকস খরচ কমাতে হবে। লজিস্টিকসের ক্ষেত্রে আমি যদি খরচ কমাতে পারি তাহলে রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ খরচ কমে যাবে। আর এটা করতে যা যা করা দরকার, সেই সহায়তা দেওয়া হবে। খরচ কমিয়ে সময় মতো সেবা দেওয়ার জন্যই নীতিমালাটি করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসিতে উত্তরণের পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ। এখানে যারা উৎপাদনে আছেন, যারা রপ্তানি করেন তাদের যেন নানাভাবে আমরা সাপোর্ট দিতে পারি, যেন চ্যালেঞ্জটা তারা নিতে পারেন।‌ সেটার অংশ হিসেবেই এ নীতিমালাটি হচ্ছে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, মন্ত্রিসভা বলেছে এ নীতিমালাটি সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এ কারণেই তারা এ নীতিমালা করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top