সকল মেনু

জনপ্রিয় হচ্ছে আকাশপথে ঈদযাত্রা

সড়কপথে ঢাকা থেকে সৈয়দপুরের দূরত্ব প্রায় ৩২৭ কিলোমিটার। এ পথে বাসে যেতে সময় লাগে প্রায় আট ঘণ্টা। একইভাবে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৩৯৭ কিলোমিটার। সড়কে যানজট না থাকলে এ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা। সড়কে যানজট থাকলে গন্তব্যে পৌঁছানোর নির্দিষ্ট সময় থাকে না। ফলে এ ধরনের সীমাহীন ভোগান্তি এড়াতে আকাশপথে ঝুঁকছেন যাত্রীরা।

দেশের এয়ারলাইন্স সংস্থাগুলো জানায়, কয়েক বছর ধরে সড়ক, নৌ ও রেলপথের ভোগান্তি এড়াতে আকাশপথে যাতায়াত ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার ঈদুল ফিতর সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ঈদযাত্রা এবং ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রিও শেষ। এছাড়া ঈদের পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট ভ্রমণে টিকিটের চাপ রয়েছে। তবে ঈদ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক রুটে বেড়াতে যাওয়ার টিকিটের চাহিদা কমেছে।

এদিকে যাত্রী চাহিদা বাড়ায় অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। এর মধ্যে টিকিট চাহিদার শীর্ষে রয়েছে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশাল। যাত্রীদের স্বস্তিতে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে কাজ করছে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কয়েকটি এয়ারলাইন্স টিকিটে মূল্যছাড়ও দিচ্ছে। তবে জেট ফুয়েলের দাম বাড়ায় টিকিটের দাম ক্রমেই বাড়ছে। সরকার জেট ফুয়েলের দাম কমালে ফ্লাইটে যাতায়াত আরও জনপ্রিয় হবে বলে মনে করছেন এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা।

ভোগান্তি এড়াতে আকাশপথে যাতায়াত ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার ঈদুল ফিতর সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ঈদযাত্রা এবং ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রিও শেষ। এছাড়া ঈদের পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট ভ্রমণে টিকিটের চাপ রয়েছে। তবে ঈদ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক রুটে বেড়াতে যাওয়ার টিকিটের চাহিদা কমেছে

এখন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ারলাইন্সগুলো দিনে প্রায় সাত হাজার যাত্রী বহন করে। তার মধ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতরে নীলফামারীর সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিটের চাহিদা বেশি। চট্টগ্রাম ও সিলেটে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টিকিটের চাহিদা কিছুটা বাড়ছে। যাত্রী চাহিদা কম থাকায় ঈদের আগে ফ্লাইট কমছে কক্সবাজারে। তবে ঈদের পর টানা এক সপ্তাহ কক্সবাজারে টিকিটের চাহিদা কয়েকগুণ বাড়ছে।

বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত রয়েছে ২১টি উড়োজাহাজ। যেগুলো দিয়ে অভ্যন্তরীণ সাতটি রুট (চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল ও রাজশাহী) এবং ২০টি আন্তর্জাতিক রুটে লন্ডন, ম্যানচেস্টার, টরেন্টো, রিয়াদ, জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম, দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ, কুয়েত, দোহা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, ক্যান্টন (গুয়াংজু), কলকাতা, দিল্লি ও কাঠমান্ডু যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।

এর মধ্যে গত ৪ এপ্রিল থেকে ইদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীদের যাতায়াত সুবিধার্থে অভ্যন্তরীণ রুটে ১৮টি ফ্লাইট বাড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ৯টি (যাওয়া-আসা মিলে ১৮টি) ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ারলাইন্সটি। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইটসমূহ পরিচালিত হবে। এখন সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর ও বরিশাল রুটে এসব অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীরা বিমানের বড় উড়োজাহাজগুলোতে ভ্রমণ করতে পারছেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, যাত্রীরা বিমানের যে কোনো সেলস সেন্টার, বিমান ওয়েবসাইট, বিমান কল সেন্টার ১৩৬৩৬ ও বিমান অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি থেকে এসব রুটের টিকিট কিনতে পারছেন। বিমানের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস থেকে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে প্রমোকোড BGDEAL24 ব্যবহার করে মূল ভাড়ার ওপর ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাওয়া যাচ্ছে।

দেশের বৃহত্তম বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুটি উড়োজাহাজ দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি। এখন এয়ারলাইন্সটির বহরে ২৪টি উড়োজাহাজ। ৭টি অভ্যন্তরীণ ও ৯টি দেশের ১১টি আন্তর্জাতিক রুটে সুনামের সঙ্গে যাত্রী পরিবহন করছে ইউএস-বাংলা।

এয়ারলাইন্সগুলো দিনে প্রায় সাত হাজার যাত্রী বহন করে। তার মধ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতরে নীলফামারীর সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিটের চাহিদা বেশি। চট্টগ্রাম ও সিলেটে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টিকিটের চাহিদা কিছুটা বাড়ছে। যাত্রী চাহিদা কম থাকায় ঈদের আগে ফ্লাইট কমছে কক্সবাজারে। তবে ঈদের পর টানা এক সপ্তাহ কক্সবাজারে টিকিটের চাহিদা কয়েকগুণ বাড়ছে

জানতে চাইলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আগামী ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ধরে মাসখানেক আগ থেকেই সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছিল। এরই মধ্যে সৈয়দপুর, রাজশাহীগামী সব ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শেষ। ঈদের পর এক সপ্তাহ পর্যন্ত ঢাকাগামী ফ্লাইটগুলোর গড়ে ৮০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এছাড়া ঈদের পর এক সপ্তাহ পর্যন্ত কক্সবাজারে চাহিদা বেশি।

ইউএস-বাংলা ৯টি দেশের ১১টি আন্তর্জাতিক রুটে (গুয়াংঝু, কলকাতা, চেন্নাই, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দোহা, মালে, মাস্কাট, দুবাই, শারজাহ) ফ্লাইট পরিচালনা করে। ঈদের ছুটিতে এসব রুটে পর্যটকদের টিকিট চাহিদা কেমন, জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বলেন, স্বাভাবিক সময়ের মতোই আন্তর্জাতিক গন্তব্যে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রবাসী এবং পর্যটকদের চাহিদা বিবেচনায় আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে আবুধাবিতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে ইউএস-বাংলা।

দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা নভোএয়ার ২০১৩ সাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। গত ১১ বছরে ধারাবাহিকভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে নভোএয়ার। এখন নভোএয়ারের বহরে ৭২ আসনের এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের সাতটি নিজস্ব উড়োজাহাজ রয়েছে।

এসব উড়োজাহাজ দিয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রায় ২৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এবার ঈদে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালে টিকিটের চাহিদা বেশি। এর মধ্যে ঈদের আগের ৯০ শতাংশ ও পরে ফ্লাইটের টিকিট গড়ে ৭০ শতাংশ বিক্রি হয়ে গেছে। যে টিকিট আছে, সেগুলোর ভাড়া ক্রমেই বাড়ছে।

এবার সৈয়দপুরগামী যাত্রীদের টিকিটের চাহিদা বেশি। এ রুটে নিয়মিত দুটি ফ্লাইট চলতো। ঈদে যাত্রী বাড়ায় আরও দুটি ফ্লাইট বাড়ানো হয়েছে। ঈদের পরও তা থাকবে। এছাড়া সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে ঈদের এক সপ্তাহ আগে ও এক সপ্তাহ পরের গড়ে ৯০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শেষ। এছাড়া ঈদের পরের সপ্তাহের কক্সবাজারের টিকিটের চাহিদা বেশি রয়েছে

স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে টিকিট সর্বনিম্ন ৩০০০ টাকা থাকলেও এখন তা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এভাবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, টিকিটের দামও বাড়ছে। এর বাইরে নভোএয়ার ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে এই রুটে ঈদযাত্রীদের কোনো চাপ নেই বলে জানিয়েছেন নভোএয়ার সংশ্লিষ্টরা।

২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি এয়ারক্র্যাফট দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে এয়ার অ্যাস্ট্রা। এখন কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি গন্তব্যেই যাত্রী চাপ রয়েছে।

ঈদে টিকিট চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে এয়ার অ্যাস্ট্রার উপ-ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) সাকিব হাসান শুভ বলেন, এবার সৈয়দপুরগামী যাত্রীদের টিকিটের চাহিদা বেশি। এ রুটে নিয়মিত দুটি ফ্লাইট চলতো। ঈদে যাত্রী বাড়ায় আরও দুটি ফ্লাইট বাড়ানো হয়েছে। ঈদের পরও তা থাকবে।

এছাড়া সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে ঈদের এক সপ্তাহ আগে ও এক সপ্তাহ পরের গড়ে ৯০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শেষ। এছাড়া ঈদের পরের সপ্তাহের কক্সবাজারের টিকিটের চাহিদা বেশি রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top