সকল মেনু

১৬০পুঁজিতে এখন কোটিপতি কলা চাষী নাজির হোসেন

Picture-01 ডাঃ জি. এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ  কলা চাষে বিপ্লব ঘটিয়ে শূণ্য থেকে বৃত্তে পরিণত হয়েছে কুড়িগ্রামের কলাচাষী নাজির হোসেন নিরলস পরিশ্রম ও সততার গুণে বলিয়ান একজন মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তার নিরলস পরিশ্রম আর সদইচ্ছা ও প্রচেষ্টা।  কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা ও ইউনিয়নে গঙ্গারহাট এলাকার আব্বাস আলীর কৃতি সন্তান নাজির হোসেন পরিত্যাক্ত চরে ফসলি জমি পরিণিত করে সফল কলাচাষী। ছোট বেলা থেকে গ্রামে কলা ব্যবসা ও কলাচাষে নেশা ছিল তার অবিরত। কলা বাগান প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন তার সঙ্গ ছাড়েনি। অনেক কষ্ট বির্সজন দিয়ে সে স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে ১৯৯৫ সালে ১৬০ টাকা মূলধন নিয়ে কলা ব্যবসা শুরু করে পর্যায়ক্রমে ২০০০ সালে ফুলবাড়ী চরাঞ্চলে কুলাঘাট-বাংটুর ঘাট পর্যন্ত ৫০ একর পতিত বালুচর লিজ নিয়ে প্রচেষ্টায় মালভোগ কলা বাগান প্রতিষ্ঠা করে কলা বিক্রি করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আয় করে। ঐ স্থান পরিবর্তন করে ২০০৮ সালে ভুরুঙ্গামারী সোনাহাট ব্রীজপাড়, কালিরহাট (চর বলদিয়া) ও চরধাউরার কুটি দুধকুমার নদী বেষ্ঠিত ২২-২৩ বছর পূর্বে জেগে ওঠা পরিত্যক্ত বালুচর স্থানীয় মানুষদের ধারণা বদলে দিতে আলোর বর্তিকা হয়ে পতিত চরে ১০০ একর স্থানীয় লোকদের নিকট ৮ বছরের লিজ প্রতি একর ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ করে চরে ১১টি মালভোগ কলা বাগান ও বাগানের মাঝে মাঝে ৩০ হাজার ইউক্লেকটর, গামারী বৃক্ষ রোপন করাসহ পাশাপাশি বাগানে মৌসুমী ফসল চাষাবাদ করে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা আয় করেন। ২০১৩ সালে মূলধন ৭০ লক্ষ টাকা নিয়ে ১১’টি কলা বাগান চাষাবাদ করলে ৫০ লক্ষ টাকা উঠে আসে বাকী ২০ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। দরিদ্র কৃষকদের কলা চাষে আগ্রহী করে তুলতে পরামর্শ ও উৎসাহিত করছেন।স্থানীয় কৃষকরা তাদের ভাষায় বলেন, আমাগোরে চরে জন্মের পর থাইক্যা ক্ষেত হয় নাগো। ক্ষেত আইবো হেইডা হামরা ভাবিনাইক্যা আমগো অহন থাইকা জমিতে ক্ষেত বুনাইয়া ঘরে তুলবার পারুম ভাবতে মন আনচান করতাছে। নাজির হোসেন বলেন ২০০৮ সাল থেকে আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যানের সার্বিক সহযোগীতায় কলা বাগান চাষাবাদ করে আসছি। এদেশে জন্ম গ্রহণ করাটা আমার জন্য অভিশাপ কারণ হচ্ছে সরকার কৃষি খাতে যে সার্বিক ও আর্থিক  সহযোগীতার কথা বলে যাচ্ছেন সে সুবিধা থেকে আমি সমুদয় বঞ্চিত। আমি দাদন ব্যবসায়ীর নিকট চরা সুদে ৬ লক্ষ ঋণ নিয়ে প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকা সুদ দিয়ে আসছি। আমি সরকারী, বেসরকারী ও কৃষি, ইসলামী, অগ্রণী, জনতা,রুপালী ব্যাংকসহ ব্র্যাক, আরডিআরএস, আশা, টিএমএসএস, কেয়ার এনজিও, কর্তৃপক্ষের সহযোগীতার জন্য অফিসে ধর্ণা দিয়েও কোন সহযোগীতা পাইনি বরং হয়রানির শিকার হয়েছি। আমি ফুলবাড়ী মানুষ তাই। ৪ মাস পূর্বে ভূরুঙ্গামারী ব্র্যাক অফিস ও ইসলামী, কৃষি ব্যাংক ঋণ দেওয়ার নামে বিভিন্ন টালবাহানা করে হয়রানী করেছে। বর্তমানে কলা বাগানে মৌসুমি ফসল চাষে মিষ্টি কুমড়ার বীজ কিনতে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। অর্থের অভাবে বীজ ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। পাইকের ছড়া ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন প্রথমবারের মত বালুচরে কলাচাষ আমাদের অবাক করে দিয়েছে। দুরদুরান্ত তেকে অনেক মানুষ তা দেখতে এসেছে। রায়গঞ্জ ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মন্ডল বলেন, নাজির হোসেনের কলাচাষে স্থানীয় কৃষকরা বিস্তৃীর্ণ জমিতে ইতিমধ্যে কলাচাষ শুরু করেছে। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষি অফিসার শহিদুজ্জামান বলেন নাজির হোসেনর কলা বাগান গত ২৭ অক্টোবর-২০১৩ সরেজমিন পরিদর্শন করে আমি আশ্চর্য হয়েছি। পতিত বালুচরে ফসল ফলানো সম্ভব ছিল না কিন্তু কলাচাষী তার মেধায় সাবলম্বী হচ্ছে। কৃষি ঋণ ব্যাংক অথবা এনজিও কৃতপক্ষ করলে নাজির হোসেন সমস্যা কাটিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচ্ছল করে তুলতে পারবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ জে এম এরশাদ আহসান হাবিব হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, সফল কলাচাষীর কলাবাগানটি পরিদর্শন করে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতীপ কুমার মন্ডল বলেন, এত বড় কলা বাগানের বিষয়ে আমার জানা নেই। কলা বাগানটি পরিদর্শন করে সকল প্রকার সহযোগীতা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top