সকল মেনু

‘সরকার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে না’

সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে না বলে দাবি করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অকাট্য প্রমাণ থাকার পরও বিদেশে ছড়ানো হচ্ছে- তার (ড. ইউনূস) বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সেগুলো প্রথমে মিথ্যা এবং বলা হচ্ছে আমরা তাকে হয়রানির জন্য এটা করছি।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দুটো কথাই- সরকার ড. ইউনূসকে হয়রানির করার জন্য কিছু করছে না, সরকার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করছে না। যে মামলা হয়েছে, সেটা শ্রমিকরা করেছিল। এরপর শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যে অধিদপ্তর আছে, সেই ডিপার্টমেন্ট তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ড. ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। গত ২৯ জানুয়ারি ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের জানানো দরকার। সরকার বারবার বলছে, এই মামলা সরকার করেনি। আপনারা (সাংবাদিকরা) তো সাক্ষী, আপনারা তো কিছু বলছেন না। এটি (মামলা) কী সরকার করলো না শ্রমিকরা? আপনারা বারবার বলেন, এটি মিথ্যা কথা। কলকারখানা অধিদপ্তর সরকারের অধিদপ্তর, সে করেছে। শ্রমিকরা করেনি।’

ড. ইউনূসের নামে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা ও সাজা পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিচারাধীন মামলা নিয়ে আমি কথা বলি না। কিন্তু, যেখানে সরকার , বিচার বিভাগ এবং দেশের ব্যাপার জড়িত এবং যখন দেশের মর্যাদা হেয় করার প্রচেষ্টা চলে, তখন নিশ্চুপ থাকতে পারি না।’

আনিসুল হক বলেন, ‘দেশের আদালত, বিচার বিভাগ এবং বাংলাদেশের মর্যাদা, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ধারাবাহিকতাকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য একটি মামলাকে কেন্দ্র করে অপ্রচার হচ্ছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যেভাবে হচ্ছে সেটি মোকাবিলা করার জন্যই আজকে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি।’

‘সংবাদ মাধ্যমে আমরা সত্য তুলে ধরবো। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। আমরা কারও আঙুলি হেলনে চলি না। দেশে আইন আছে, আমরা সেই আইনে দেশ চালাবো।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ আমাদের সবার, দেশের সব অঙ্গ সেটি নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা, বিচার বিভাগ বলেন, এ দেশের মানুষের। এদেশের মানুষের দায়িত্ব এগুলোকে রক্ষা করা এবং এগুলোর কাজ সঠিকভাবে চলতে দেওয়া। কেউ আইন ঊর্ধ্বে নয়, অপরাধ করলে সবাইকেই আইনের মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। আমরা বহুদিন বিচারহীনতায় ভুগেছি। আওয়ামী লীগ সরকার থেকে কেউ বিচারহীনতায় ভোগনি।’

বিদেশি যারা বিবৃতি দিয়েছেন তারা বিচার দেখতে চান, বিশেষজ্ঞরা দল পাঠাতে চান। যদি কেউ দেখতে চান কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীও তাদের আহ্বান জানিয়েছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেখতে চাওয়া তো শেষ হয়ে গেছে, যখন ফেয়ার ট্রায়াল শেষ হয়ে গেছে। ট্রায়াল ইজ ওভার। এখন দেখতে চাওয়ার মানে কী? খাঁচা থেকে বের হয়ে গেলে যদি বলেন বাঘ দেখবো তাহলে তো হবে না। আমরা কথা হচ্ছে ওনারা কী দেখতে চান এটা পরিস্কার করতে হবে। তাহলে আমি বুঝবো ওনাদের দেখতে দেওয়া যায় কি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে যে মামলা, রায়ের বিরুদ্ধে যে আপিল করা হয়েছে, সেটা তো আর ক্লোজ ডোর হবে না। সেটা সবাই দেখতে পারবেন। আপনারাও যেমন দেখতে পারবেন, বিদেশ থেকে যদি লোক আসে তারা দেখতে পারবেন। এরমধ‌্যে আমরা কোনো বাধা দেবো না।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top