সকল মেনু

যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’, ঢাবির ৮২৫ শিক্ষকের বিবৃতি

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চিঠিকে আন্তর্জাতিক মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৮২৫ শিক্ষক। উদ্বেগ প্রকাশ করে এ চিঠিকে সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন ও আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান। তবে বিবৃতিতে নীল দলের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

এ ছাড়া বিবৃতিতে শিক্ষকরা গত ৩১ অক্টোবর জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রতিবাদ’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা উল্লেখ করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ মানুষ হত্যা, ভাঙচুর ও সহিংসতার মাধ্যমে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে যারা তৎপর তাদেরকে উৎসাহিত করবে বলে তারা মনে করেন।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চিঠি দেয়। পাশাপাশি এতে ভিসানীতির কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, সংবিধান অনুসারে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তপশিল ঘোষণার প্রাক্কালে একটি দেশের রাষ্ট্রদূত সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে সেদেশের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তিন রাজনৈতিক দলকে নিঃশর্ত সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি বিতরণ করেছেন।

তারা উল্লেখ করেন, গত ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৬টি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশগ্রহণ করে। বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সমমনা কয়েকটি দল সংলাপে অংশগ্রহণ না করে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী বিধি-ব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে। এর আগেও সরকারকে পদত্যাগের এক দফা শর্ত জুড়ে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতই শর্তহীন সংলাপের দাবিকে নাকচ করেছে।

তারা আরও উল্লেখ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বন করে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল। একই ধারাবাহিকতায় তাদের নীতি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে রসদ যুগিয়ে চলা। হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও রাষ্ট্রটি কোনো কথা বলেনি। তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্রমাগ্রসরমান বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে পশ্চাদগামী করার অপতৎপরতায় রসদ যোগাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াত সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে জনসমর্থন না পেলেও ওই দেশের রাষ্ট্রদূতের পক্ষপাতমূলক আচরণে উৎসাহিত হয়ে তারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়াস পাচ্ছে।

তারা বিবৃতিতে সংলাপের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টির অপতৎপরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top