সকল মেনু

হেফাজত তাণ্ডবের মিথ্যা তথ্য: আদিলুর-এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড

মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টা ৪৭ মিনিটে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এই মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন। দুপুর ২ টা ১০ মিনিটে বিচারক ইংরেজিতে রায় পড়া শুরু করেন।

রায় ঘোষণা সময় দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিন রায় শুনতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার পর্যবেক্ষক আদালতে আসেন। তারা এজলাসের বেঞ্চে বসে পুরোটা সময় ধরে রায় পড়া শোনেন। আদালতে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা।

এরআগে আদালতে এসে অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি সাচা ব্লুমেন বলেন, আমরা রায় পর্যবেক্ষণ করতে এসেছি। রায়ের বিষয়ে তাদের কোন উদ্বেগ আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন এ বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই আমরা শুধু পর্যবেক্ষক হিসেবে আদালতে এসেছি।

গত ২৪ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক। তবে ঐদিন তা প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক রায় ঘোষণা পিছিয়ে আজ দিন ধার্য করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে হেফাজত ইসলাম। রাতে তাদের সরাতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে দাবি করেছিল মানবধিকার সংগঠন অধিকার। কিন্তু সরকারের ভাষ্য সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি।

শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ডিবির তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম। পরে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। এটিই ছিল তথ্যপ্রযুক্তি আইনের প্রথম মামলা। মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়।

ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

এদিকে মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।’

‘পাশাপাশি তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে, যা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ও (২) ধারায় অপরাধ। একইভাবে ওই আসামিরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর টেষ্টা চালায় এবং সরকারকে অন্য রাষ্ট্রের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top