সকল মেনু

কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ৪৩

মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৬ জন। সম্প্রতি দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে।

রয়টার্স বলছে, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোলিজ সেনারা ক্র্যাকডাউন শুরু করে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এ মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বন্ধ করতে ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা আন্তগোষ্ঠী সহিংসতার জেরেই বুধবার গোমা শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়ে আসছে। এবারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষরা এক পুলিশ সদস্যকে মাটিতে ফেলে লাঠি ও পাথর দিয়ে মারধর করছেন।

এর আগে কঙ্গো কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের (৩১ ‍আগস্ট) এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। এছাড়া আরও ১৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও এ ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কঙ্গোর সেনারা একটি লরিতে বহু মরদেহ স্তূপাকার করে রাখছে ও গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবশ্য ফুটেজটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

গোমায় ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের স্থানীয় শাখার প্রধান অ্যান-সিলভি লিন্ডার বলেছেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর তার ক্লিনিকে গুরুতর ছুরিকাঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ক্লিনিকে পৌঁছানোর আগেই অনেকে মারা যান।

এদিকে, এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলে জানায়। এছাড়া এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার পাশাপাশি আটককৃতদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে মনুস্কো।

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে কঙ্গোর গোমা ও বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।

সূত্র: রয়টার্স

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top