সকল মেনু

ত্যাগের মহিমা নিয়ে এলো ঈদুল আজহা

পথে পথে চোখে পড়ছে ট্রাকে বা গরুর গলার রশি ধরে হেঁটে লোকজনের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। কোরবানির পশু অনেকেই কিনে ফেলেছেন। আজও দিনভর চলবে পশু কেনা। মঙ্গলবার পবিত্র হজ পালিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ত্যাগের মহিমা নিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হবে সারা দেশে। এই ঈদ আমাদের দেশে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত।

ঈদুল ফিতরের মতো একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে চাঁদ দেখা নিয়ে অনিশ্চয়তা ঈদুল আজহায় থাকে না। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যায় ঈদের ১০ দিন আগেই। ফলে কোরবানির দিনটি আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। কোরবানিদাতা বা যাঁরা ঈদ করতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যান, তাঁরা যথেষ্ট সময় হাতে নিয়েই প্রস্তুতি নিতে পারেন। সেই প্রস্তুতিরই লক্ষণ দেখা গেছে পশুর হাট থেকে অনেকের কোরবানির পশু কিনে বাড়ি ফেরার দৃশ্যে। যাঁরা ঈদে গ্রামে যেতে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ আরও দুদিন আগেই বাড়ির পথে যাত্রা করেছেন। তবে সোমবার থেকে রাজধানীর স্টেশন-টার্মিনালে যাত্রীর ভিড় বাড়তে থাকে। বেশ নিরিবিলি হয়ে আসে রাজধানীর যানবাহনে ঠাসা সড়কগুলো।

ঈদুল আজহায় সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। হজরত ইব্রাহিম (আ.) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)- কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে হজরত ইসমাইল (আ.)- এর পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)–এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ১০ জিলহজ পশু কোরবানি করে থাকেন। ঈদের নামাজের খুতবায় খতিবরা এ ঘটনা উল্লেখ করে কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরবেন। ঈদের জামাতের শেষে অনেকেই গোরস্তানে যাবেন তাঁদের প্রয়াত মা–বাবা ও নিকটাত্মীয়দের কবর জিয়ারত করতে। ঈদের আনন্দের দিনে তাঁদের কথা স্মরণ করে শোকার্ত হৃদয়ে পরম করুণাময়ের দরবারে রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করবেন।

ঈদের নামাজ শেষে পশু কোরবানি করা হবে মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য। ঈদের পরের দুই দিন ১১ ও ১২ জিলহজ তারিখেও কোরবানি করার বিধান রয়েছে।

ঈদের জামাত

রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হাইকোর্ট- সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে। ইতিমধ্যেই ঈদগাহের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয় ঈদগাহের তত্ত্বাবধান করে থাকে। এবার এখানে জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায়। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে সকাল আটটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজের ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মাওলানা মুশতাক আহমেদ। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ ও নামাজের জায়গা করা হয়েছে। শামিয়ানার নিচে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি এবার জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এ ছাড়া বরাবরের মতো এবারেও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল সাতটায়। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। এর পরের জামাতগুলো হবে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং শেষ জামাত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

বাণী

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি, ঐক্য ও শান্তি কামনা করেছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে সমাজের বিত্তবান ও সচ্ছল মানুষদের সমাজের দারিদ্র্যপীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, ঈদুল আজহা শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয়। তিনি পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top