সকল মেনু

ভুটানের কাছে যে হার নাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবল

১০ অক্টোবর ২০১৬। ভুটানের রাজধানী থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডের প্লে-অফ ম্যাচের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হয়েছিল ভুটান-বাংলাদেশ।

বেলজিয়ামের কোচ টম সেইন্টফিটের অধীনে এ ম্যাচে মাঠে নামার আগেই মুখ ভারি ছিল মামুনুলদের। কারণ, তার চারদিন আগেই ঢাকায় ভুটানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিলেন তারা। সেটি ছিল ভুটানের বিপক্ষে নবম সাক্ষাতে দ্বিতীয় ড্র। ঘরের মাঠের সে ড্রয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা।

স্বাভাবিকভাবেই ফিরতি ম্যাচে জয়ের একটা তাড়না নিয়ে থিম্পু গিয়েছিলেন ফুটবলাররা। জয় নয়, থিম্পু থেকে উল্টো লজ্জা নিয়ে ফিরেছিল জাতীয় ফুটবল দল। ৩-১ গোলের হার।

আন্তর্জাতিক ফুটবলে সেটিই ভুটানের কাছে বাংলাদেশের একমাত্র হার। দেশের ফুটবল অঙ্গনেই নয়, পুরো ক্রীড়াঙ্গন কেঁপে উঠেছিল এক হারে।

ফুটবলে যে কোনো ম্যাচে যে কোনো দল হারতেই পারে। তবে ভুটানের কাছে ওই হারের পর ‘জাত গেলো, জাত গেলো’ রব উঠেছিল ফুটবল অঙ্গনে। দেশের ফুটবল শেষ হয়ে গেলো বলেও আওয়াজ তুলেছিলেন অনেকে। রাজপথ কাঁপিয়েছিলেন কেউ কেউ। বাফুফে কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে মতিঝিলের বাফুফের ভবনের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন কিছু মানুষ।

এর আগে ৯ ম্যাচে বাংলাদেশের জালে মাত্র দুইবার বল পাঠাতে পেরেছিল ভুটানিজরা। সেখানেই এক ম্যাচেই ৩ গোল বাংলাদেশের জালে! অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল অনেকের।

ভুটানের কাছে শেষ পর্যন্ত হারতে হবে এবং সেটা এত বাজেভাবে; তা অনেকে মানতেই পারছিলেন না। খেলাধুলায় হার-জিত থাকবেই কথাটি ভুলে গিয়েছিলেন অনেকে।

তবে এটা ঠিক, এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে উঠতে না পারায় দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক সূচি ছিল না বাংলাদেশের। প্রায় ১৭ মাস বাংলাদেশ ছিল খেলার বাইরে। ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর ভুটানের কাছে হারার পর বাংলাদেশ প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ২০১৮ সালে ২৭ মার্চ লাওসের বিপক্ষে।

লাওসের মাঠে অনুষ্ঠিত সেই ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। লাওস যাওয়ার পথে অবশ্য বাংলাদেশ দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি টায়ার-২ ম্যাচ খেলেছিল ব্যাংককে থাইল্যান্ডের দুটি ক্লাবের বিপক্ষে।

১০ অক্টোবর কি হয়েছিল ভুটানের কাছে প্রথম এবং একমাত্র হারের ওই ম্যাচে? খেলার পর কি বলেছিলেন ওই সময়ের কোচ টম সেইন্টফিট। ম্যাচের পর টম সেইন্টফিট গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘এ হারের জবাব আমার কাছে নেই। খেলোয়াড়রা চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ওদের খেলা দেখে আমি কেবল হতাশই হইনি, দুঃখও পেয়েছি।’

ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশ ও ভুটান আরো তিনবার মুখোমুখি হয়েছে। তিনবারই জিতেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ ও ভুটান। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হওয়া ওই দুই ম্যাচের প্রথমটি বাংলাদেশ জিতেছিল ৪-১ গোলে, দ্বিতীয়টি ২-০ গোলে।

তবে, জাতীয় দল না হলেও ওই বছরই ২ ডিসেম্বর নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে এসএ গেমস ফুটবলে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল ১-০ গোলে হেরেছিল ভুটানের কাছে।

বুধবার ভারতের বেঙ্গালুরুতে ভুটানের বিপক্ষে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে উঠতে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও বাংলাদেশকে জিততেই হবে নাকি ড্র করলেও চলবে, তা নির্ভর করবে বিকেলে অনুষ্ঠিত লেবানন ও মালদ্বীপের ম্যাচের ফলাফলের ওপর।

এটি হবে বাংলাদেশ ও ভুটানের চৌদ্দতম দেখা। এর আগের ১৩ বারের মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ বার। ভুটান একবার জিতেছে, ড্র হয়েছে ২ ম্যাচ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top