সকল মেনু

নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে সংবিধানের এক ‘চুলও ব্যত্যয় হবে না’

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপি যতই রূপরেখা দিক না কেন, সংবিধান অনুযায়ীই দেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব যতই রূপরেখা দিক না কেন, সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বর্তমান সরকারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন। ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র যেভাবে পালন করে, আমাদের দেশেও, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী ঠিক একইভাবে বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। তারা যত ধরণের রুপরেখাই দেক না কেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না।

ঈদের পর সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, এক দফার আন্দোলন বিএনপি ২০১৩ সাল থেকেই শুরু করেছে। এই আন্দোলনের নামে ২০১৩, ১৪ সালে দেশের মানুষ তাদের নৈরাজ্য দেখেছে। মানুষকে পুড়িয়ে মারার মহোৎসব আমরা দেখেছি। সেই পরিস্থিতি আমরা সামাল দিয়েছি। এখন বিএনপি কতটুকু কি করতে পারে, সেটা নিয়ে আমাদের ধারণা আছে। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এখন খাঁচায় বন্দি বাঘ আর মির্জা ফখরুল দেশান্তরী পলাতক আসামি। বিএনপি মহাসচিবসহ তাদের অন্যান্য নেতৃত্ব কতটুকু কি করতে পারে, সেক্ষেত্রে কী করতে হবে- সেটা আমাদের জানা আছে। তাদের শক্তি-সামর্থ্য সম্পর্কে আমরা জানি। এগুলো বাগাড়ম্বর ছাড়া অন্য কিছু নয়।

‘আমার মাঝেমধ্যে গলা ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছা করে, এই বাংলাদেশ তো আমরা চাইনি ভাই, ‘৭১ সালে এর জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এমন একটা পরিবেশ দেখতে চাইনি’। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের দেয়া এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব অবচেতন মনে সত্য কথা বলেছেন। কারণ, উনি আর ওনার বাবা বাংলাদেশটাই চাননি। ওনার বাবা ছিলেন পাকিস্তানপন্থি। ফখরুল সাহেব কয়দিন আগে বলেছিলেন, পাকিস্তানেই ভাল ছিল অর্থাৎ বাংলাদেশটাই উনি চাননি। আর ফখরুল সাহেব তো কোনোভাবেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। দেশ স্বাধীনের পর তিনি অনেকদিন আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি তো বাংলাদেশটাই চাননি।

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ, সিপিডিসহ অর্থনীতিবিদরাও সেটাই বলছেন- মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্য সম্পর্কে ড. হাছান বলেন, উনি যেসব সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের রেফারেন্স দিয়ে কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তারা কোনোদিন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল দেখেনি। কিন্তু তাদের এই ভাল না দেখার মধ্যেও নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের পদ্মাসেতু হয়েছে। মানুষের মাথাপিচু আয় ৬ শ ডলার থেকে ২৮ শ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্রের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নেমেছে। দেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আরে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ জিডিপিতে ৩৫তম ও বিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছে। খুব সহসাই ২৭ তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবে। বিএনপি এগুলো কোনোদিন দেখেনি। তাদের চোখে ছানি পড়েছে কিম্বা তাদের না দেখার দৈন্যতার জন্য তারা চিকিৎসক দেখাতে পারেন।

অর্থনৈতিকভাবে দেশ এগিয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কষ্ট হয়, বিএনপি নেতারা দেখেও দেখতে পান না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ অথনৈতিকভাবে এগিয়ে গেছে। করোনা মহামারীতে বিশে^ ২০টি দেশে পজেটিভ জিডিপি প্রোগেস করেছে। তারমধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। এগুলো যদি তারা না দেখেন, তাহলে বলার কিছু নেই। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশে^র অর্থনীতি নানাভাবে চাপে ছিল। আমাদের অর্থনীতি সেটিও কাটিয়ে উঠে এখন ঘুরে দাঁড়িয়ে আরো শক্তিশালী হচ্ছে। যেমন আমাদের রিজার্ভ কমে ৩০ বিলয়ন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। সেটি এখন বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। এত কিছুর মধ্যেও গত বছর ৫৮ বিলিয়ন ডলার আমরা রপ্তানী করেছি, যেটি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সুতরাং আমাদের অর্থনীতি অনেক ভাল আছে। আর মির্জা ফখরুলরা কামনা করেন অর্থনীতিটা খারাপ হোক। সেজন্যই তারা এসব কথা বলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top