সকল মেনু

হজ-ওমরার অন্যতম শর্ত ‘তালবিয়া’ পড়া

হজ-ওমরার ইহরাম বাধার পর প্রথম যে আমল ও তাসবিহ গুরুত্বসহ বেশি পড়তে হয়, তাহলো- তালবিয়া। অথচ এ তালবিয়া-ই অনেকে পড়তে জানে না। এর ফজিলত ও সওয়াব অনেক বেশি। এক কথায় হজের সফরে সার্বক্ষনিক ওঠা-বসা, ঘুমাতে যাওয়া, ঘুম জেগে ওঠা কিংবা স্বাভাবিক চলাফেরাসহ সব সময় বেশি বেশি তালবিয়া পড়া। তালবিয়া কী?

তালবিয়া

পুরো তালবিয়াকে ৪ নিঃশ্বাসে ৩ বার পাঠ করা-

لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ

> লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক,

> লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,

> ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক,

> লা শারিকা লাক।

তালবিয়ার অর্থ

> আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত!

> আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই।

> নিঃসন্দেহে সব প্রশংসা ও সম্পদরাজি তথা নেয়ামত আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্যও আপনার।

> আপনার কোনো অংশীদার নেই।

তালবিয়া পাঠের শর্ত

হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্য ইহরামের পর প্রথম কাজই হলো তালবিয়া পড়া। আর প্রথম বার তালবিয়া পড়া হজ ওমরার জন্য শর্তও বটে। এরপর যতদিন হারামে থাকবে ততদিন তালবিয়া পড়া সুন্নত।

তালবিয়া আরবিতেই পড়তে হবে। আর তা হতে হবে বিশুদ্ধ। যারা বিশুদ্ধভাবে তালবিয়া পাঠ করে পারেন না। তাদের জন্য বিশুদ্ধভাবে তালবিয়া শিখে নেওয়া আবশ্যক। এবারও লাখ লাখ হাজি সারা বিশ্ব থেকে হজ পালন করবে। তাদের উচিত বিশুদ্ধভাবে তালবিয়া শিখে নেয়া।

যেসব দিন ও স্থানে তালবিয়া পাঠ করতে হয়

হজের সব রোকনগুলোতেই উচ্চ স্বরে হাজিগণ (নারীরা নিচু স্বরে) তালবিয়া পাঠ করবেন। আর তাহলো-

> আরাফাতের ময়দানে।

> মিনায়।

> মুজদালিফায়।

> হজ ও ওমরার এক রোকন থেকে অন্য রোকনের মধ্যবর্তী সময়ে তালবিয়া পড়া।

> উঁচু স্থানে আরোহন কিংবা নিচে নামার সময় তালবিয়া পড়া।

তালবিয়ার ফজিলত

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণায় ইহরামের পর একবার তালবিয়া পাঠ করা শর্ত আর হজের পুরো সফরে বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করা সওয়াব ও কল্যাণের কাজ। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-

১. হজরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যখন তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার (তালবিয়া পাঠকারীর) ডান-বামে যত পাথর, গাছ ও মাটি ( আছে, এ সবই) তার সঙ্গে তালবিয়া পড়তে থাকে। এমনিভাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত গিয়ে তা (পড়া) শেষ হয়।’

২. হজরত আবু বরক ছিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন ধরণের হজ সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘আল-আজ্জু, ওয়াছ-ছাজ্জু’। অর্থাৎ উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ এবং কোরবানি করা।’

৩. হজরত খাল্লাদ ইবনে সায়েদ ইবনে খাল্লাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার কাছে জিবরিল আলাইহিস সালাম এসে বললেন যে, আমি যেন আমার সাহাবিদেরকে উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়ার নির্দেশ প্রদান করি।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনে ইচ্ছুককে বিশুদ্ধভাবে তালবিয়া শেখার তাওফিক দান করুন। বিশুদ্ধভাবে বেশিবেশি তালবিয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। হজের কাজগুলো সহজ করে দিন। তালবিয়াসহ হজের যাবতীয় নিয়ম ও বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top