সকল মেনু

২ জাপানির অর্থ-আইফোন ছিনিয়ে কক্সবাজারে প্রমোদ ভ্রমণে আসামিরা

রাজধানরি মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন দুই জাপানি পর্যটক। তাদের কাছ থেকে দেড় লাখ জাপানি ইয়েন, ২৮ হাজার বাংলাদেশি টাকা, দুটি আইফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। এর চারদিন পর তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. খায়রুল ইসলাম স্বপন, জিহাদুল ইসলাম মামুন ও মো. আবু রাসেল প্রত্যয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া কিছু মালামালও।

পুলিশ জানায়, দুই জাপানি পর্যটকের কাছ থেকে নগদ অর্থসহ বেশ কিছু মালামাল ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। এরপরই তারা প্রমোদ ভ্রমণে কক্সবাজার চলে যান। কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে সীতাকুণ্ড জলপ্রপাত দেখতে যান তারা। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের টিম।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, জাপানি ওই দুই নাগরিক গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন। ২৪ এপ্রিল রাজধানীর শুক্রাবাদ এলাকার হোটেল নন্দিনীতে ওঠেন। সেদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ ও সংলগ্ন কবরস্থানে ঘুরতে আসেন।

তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে জাপানি দুই নাগরিক কবরস্থান থেকে বের হতে চাইলে অজ্ঞাতনামা তিনজন যুবক তাদের মিসগাইড করে কবরস্থানের ভেতরের দিকে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা যুবকরা তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, এক লাখ ৫৩ হাজার ৮০০ জাপানি ইয়েন, ২৮ হাজার বাংলাদেশি টাকা, দুটি আইফোন, দুটি ক্রেডিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লু-টুথ ছিনিয়ে নেয়।

জাপানি নাগরিকরা ভয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে হোটেলে চলে যান। পরদিন হোটেল ম্যানেজারকে বিষয়টি জানান। হোটেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। পরে এ ঘটনায় মামলা রুজু হয়।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, জাপানি নাগরিক ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করে। মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম ঘটনাস্থল কবরস্থানের গেট ও আশপাশে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ, প্রযুক্তির সহায়তা ও সোর্সের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে ঘটনায় জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করে।

‘গত ২৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানাধীন বোটঘাট এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত আসামি মো. খায়রুল ইসলাম স্বপনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার স্বপনের দেওয়া তথ্যমতে মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়েরবাজার শুটকির আড়তের পেছনে কবরস্থানের দেয়াল সংলগ্ন মাঠ থেকে লুণ্ঠিত জাপানি নাগরিকের পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, দুটি ক্রেডিট কার্ড ও একটি পাসপোর্ট ছেড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।’

ডিসি আজিমুল হক বলেন, মোহাম্মদপুর থানার আরেকটি টিম অভিযান পরিচালনা করে সীতাকুণ্ড থানা এলাকা থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত আসামি জিহাদুল ইসলাম মামুন ও মো. আবু রাসেল প্রত্যয়কে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি আইফোন, ৩০ হাজার জাপানি ইয়েন, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লু-টুথ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার জিহাদুল ইসলাম মামুন ও মো. আবু রাসেল প্রত্যয় ছিনতাইয়ের পর ৯০ হাজার জাপানি ইয়েন ও অন্যান্য মালামালসহ প্রমোদ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার চলে যান।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, কক্সবাজার যাওয়ার পর তারা কিছু ইয়েন ভাঙিয়ে খরচও করেন। তারা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে সীতাকুণ্ড জলপ্রপাত দেখার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। সীতাকুণ্ড পৌঁছালে মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতার আবু রাসেল প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে একটি দ্রুত বিচার আইনের মামলাসহ মোট তিনটি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতার ও ছিনতাই হওয়া অর্থ ও বাকি মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা এইচ এম আজিমুল হক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top