সকল মেনু

বজ্রপাতে একদিনেই প্রাণ গেলো ৯ জনের

দেশের সাত জেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সাতক্ষীরায় দুজন, চাঁপাইনাববগঞ্জে দুজন, মেহেরপুরে একজন, যশোরে একজন, রাজবাড়ীতে একজন, কিশোরগঞ্জে একজন ও ঝিনাইদহে একজন।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পৃথক স্থানে এসব ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য তুলে ধরা হলো।

জেলার কলারোয়া উপজেলায় পাঁচরকি ও সদর উপজেলার বিহারীনগরে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত দুজন হলেন- কলারোয়া উপজেলার পাঁচরকি গ্রামের কামরুল ইসলাম (৩৬) ও সদর উপজেলার বিহারীনগর গ্রামের আব্দুল্লাহ মোল্যা (৩৪)।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলার শিবগঞ্জে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন। দুপুর ২টার দিকে উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের মাস্তান বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- শ্যামপুর ইউনিয়নের শরৎনগর গ্রামের হারুন আলীর ছেলে অসিম আলী (১২) ও একই ইউনিয়নের গোপানগর গ্রামের কাদের হোসেনের ছেলে শাহীন আলী (২০)।

আহতরা হলেন- শ্যামপুর ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার কাশেম আলীর ছেলে শারওয়ার (১৫) ও লাছমানপুর এলাকার রোজবুলের ছেলে নয়ন (১৩)।

স্থানীয়রা জানান, মাস্তান বাজার এলাকার সাইফুলের আম বাগানে ফ্রুট ব্যাগিং করে ভ্যানযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন অসিম আলী, শাহীন আলীসহ চারজন। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে অসিম ও শাহীন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল (রামেক) পাঠানো হয়েছে।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরীর জুবায়ের আহমেদ জানান, আম বাগান থেকে ফেরার পথে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

মেহেরপুর

জেলার মুজিবনগর উপজেলায় বজ্রপাতে শাহাবুদ্দিন (৪০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের বিদ্যাধরপুর বাউনদা মাঠে তার মৃত্যু হয়। শাহাবুদ্দিন ওই গ্রামের স্কুল পাড়ার মৃত আলীমুদ্দিনের ছেলে।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, বিকেলে শাহাবুদ্দিন নিজের জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। এক পর্যায়ে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

যশোর

শার্শা উপজেলায় মাঠ থেকে ধান তোলার সময় বজ্রপাতে আজিজুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে উপজেলার কায়বা গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আজিজুল ইসলাম একই গ্রামের মৃত কামাল সরদার কিনুর ছেলে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিতে যেন ধান নষ্ট না হয় সেজন্য বিকেলে আজিজুল ও তার ভাইসহ ৩-৪ জন স্থানীয় ঠ্যাংগামারী বিল মাঠে নিজেদের জমির ধান গোছাতে যান। তারা মাঠে ধান গোছানো অবস্থায় বজ্রপাত হয়। এতে আজিজুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পাশে থাকা তার ভাই দেখে চিৎকার দেন। তখন স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত বাগআঁচড়ার জোহরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজিজুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

জোহরা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ক্লিনিকে নিয়ে আসার আগেই আজিজুলের মৃত্যু হয়েছে।

রাজবাড়ী

গোয়ালন্দ উপজেলায় বজ্রপাতে শহিদুল ইসলাম (৩২) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে উপজেলার হামিদ মৃধার হাট এলাকার মাঠে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। শহিদুল উপজেলার চর দৌলতদিয়া খালেক মৃধার পাড়ার জামাল মৃধার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে বৃষ্টির সময় মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক শহিদুল ইসলাম। তখন হঠাৎ বজ্রপাত হলে আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ধান কাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন আজিজুল মিয়া (৪৫) নামে এক কৃষি শ্রমিক। সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের হাওরে এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আর্দশপাড়ার এলাকার আহমেদ মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, আজিজুল মিয়াসহ কয়েকজন শ্রমিক সকালে ভবানীপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার কৃষক কাসেম মিয়ার জমিতে ধান কাটেন। বিকেলে ধান কাটা শেষে কৃষকের কাছ থেকে মুজুরি নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে বজ্রপাতে আয়াতুল মিয়ার মৃত্যু হয়।

ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা শামীম মিয়া বলেন, হঠাৎ কয়েকজন লোক দৌড়ে এসে আমাকে বলে তাদের একজন লোক বজ্রপাতে মরে গিয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করি। স্বজনরা এসে তার মরদেহ নিজ গ্রামে নিয়ে যায়।

জমির মালিক কাসেম মিয়া বলেন, সকালে জমির ধান কাটার জন্য কালিকাপ্রসাদ এলাকা থেকে পাঁচজন শ্রমিককে নিয়ে আসি। জমির ধান কাটা শেষে তাদের মজুরি নিয়ে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরছির। এ সময় বজ্রপাতে আজিজুল মারা যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সেন্টু মিয়া বলেন, ভবানীপুর গ্রামের বিলের জমিতে ধান কাটা শেষ করে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বজ্রপাতে আজিজুলের মৃত্যু হয়েছে।

ঝিনাইদহ

সদর উপজেলার বুরাপাড়া মাঠে বজ্রপাতে সুজন মীর (৩০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেল ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি কুবিরখালী গ্রামের রমিজ উদ্দিনের ছেলে।

বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বদর উদ্দিন বলেন, সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বুরাপাড়া মাঠে নিজ জমিতে কেটে রাখা ধান গোছাচ্ছিলেন কৃষক সুজন মীর। তখন বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top