সকল মেনু

ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত

বিচারব্যবস্থা সংস্কারের প্রতিবাদে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের রাজপথে নেমেছে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কট্টোর ডানপন্থি সরকার ও দেশের বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি নাগরিক আবারও বিক্ষোভে নামে।

নেতানিয়াহুর বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরেই ধারাবাহিক আন্দোলন চলে আসছে। এতে একদিকে যেমন সংস্কার বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন নেতানিয়াহু, তেমনি তার সরকারের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

শনিবার (২২ এপ্রিল) তেল আবিবে নেতানিয়াহুর মুখের ওপর ‘অপরাধমন্ত্রী’ লেখা ব্যানার চোখে পড়ে। এছাড়া তার সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নেতিবাচক লেখা সংবলিত ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভে জড়ো হন অনেকে।

তেল আবিবের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইহুদি নারীদের জাতীয় কাউন্সিলের প্রধান শিলা কাটজ বলেন, এই তথাকথিত বিচারিক সংস্কারের ফলে ইসরায়েলের গণতন্ত্রও হুমকির মুখে পড়বে। তিনি আরও বলেন, আদালতের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সব মানুষের অধিকার রক্ষা করে। এগুলোকে অবশ্যই রাজনীতি থেকে স্বাধীন রাখতে হবে।

শনিবার অনেক মা-বাবা সন্তানদের নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এক অভিভাবক বলেন, সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে এখন যা ঘটছে, তা ইসরায়েলের গণতন্ত্রের জন্য আসলেই বিপজ্জনক। নেতানিহুয়ার এই পরিকল্পনা পাস হয়ে গেলে দেশটি স্বৈরশাসনের কবলে পড়তে পারে।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, এ সংস্কার বাস্তবায়িত হলে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো খুব সহজেই বাতিল করার ক্ষমতা পাবে নেসেট বা পার্লামেন্ট। অর্থাৎ, বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ ও যেকোনো আইনি সিদ্ধান্ত বাতিল করার ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্ট সদস্যরা।

সমালোচকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা শুধু যে বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করবে তা নয়। এটি নাগরিক স্বাধীনতাকেও বিপন্ন করবে ও পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলার পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিরও ক্ষতি করবে।

চাপের মুখে মুখে গত মাসে বিচারব্যবস্থার সংস্কার থেকে সাময়িক পিছু হটার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। পার্লামেন্ট নেসেটে দেওয়া ভাষণে পিছু হটার ঘোষণা দিলেও, এখনো সংস্কার প্রস্তাব বাতিলের ঘোষণা দেননি তিনি। আর তাতেই সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে।

নেতানিয়াহুর সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে শুধু যে সাধারণ মানুষের মধ্যেই ক্ষোভ জন্মেছে তা নয়, সামরিক বাহিনীর অভিজাত রিজার্ভ ইউনিটের অনেক কর্মকর্তাদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা গেছে। তাছাড়া দেশটির অনেক ব্যবসায়ী নেতা ও নিরাপত্তা সংস্থা এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নও সাধারণ ধর্মঘট পালন করছে।

চলতি বছরের প্রথম দিকে ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থায় সংশোধন আনার পরিকল্পনা উন্মোচন করেন দেশটির বিচারমন্ত্রী ইয়ারভি লেভিন। তখন থেকেই আন্দোলনকারীরা দাবি করে আসছেন, সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top