পানি আমাদের এই বিশ্বের প্রাণের উৎস মানুষের টিকে থাকা ও ভালো থাকা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতির সমৃদ্ধির জন্য পানি অপরিহার্য কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন সহ বিভিন্ন কারণে পানির প্রাকৃতিক যে চক্র তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে দেখা দিয়েছে নিরাপদ পানির সংকট। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৬ নাম্বার যে লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জন করতে হলে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, পানি সম্পদের প্রাপ্যতা ও ব্যবস্থাপনা এবং সবার জন্য স্যানিটেশন নিশ্চিতকরণে দেশে বিদ্যমান কার্যক্রমের গতি আরো বাড়াতে হবে।
বিশ্ব পানি দিবসকে সামনে রেখে ‘পানি ও স্যানিটেশন সংকট সমাধানের জন্য ত্বরান্বিত পরিবর্তন’ বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সোমবার (২০ মার্চ) এই সেমিনারের আয়োজন করে দৈনিক ভোরের কাগজ ও এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথের নির্বাহী পরিচালক এসএমএ রশীদ। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাণী পাঠ করে শোনান বাংলাদেশে জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্রের প্রতিনিধি তাহমিদা সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. খাইরুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সরোয়ার হোসেন, ইউনিসেপএর ওয়াস বিশেষজ্ঞ শফিকুল আলম। এতে ‘রিসার্চ অ্যান্ড মনিটরিং অ্যাক্সিলারেট ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অফ ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন সার্ভিস’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাউন্ড ওয়াটার হাইড্রোলোজির ডিরেক্টর ড. আনোয়ার জাহিদ, এক্সিলারেটিং চেঞ্জ টু এসিভ এসডিজিসিক্স বাংলাদেশ কসটেক্স শিরোনামে অন্য একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. তানভীর আহমেদ। বিশেষজ্ঞ বক্তব্য রাখেন. জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) তুষার মোহন সাধু খাঁ, চিফ অপারেটিং অফিসার সিডাব্লিউআইএস-এফএসএম সাপোর্ট সেল ড. আব্দুল্লাহ আল মুঈদ, ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের উপ পরিচালক, বাশিরা আক্তার।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশেরও একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চাই। এই দুই লক্ষ্যের সমন্বয়ে আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করছি এবং সেই অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা পানির জন্য রাস্তায় মানুষকে বিক্ষোভ করতে দেখেছি কলসি নিয়ে আন্দোলন করতে দেখেছি। কিন্তু এখন চিত্র বদলেছে। ঢাকা শহরে শতভাগ পানি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে চট্টগ্রামেও করা হয়েছে রাজশাহীতেও করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সারফেস ওয়াটার প্ল্যান করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গুলশানের মত অভিজাত এলাকায় পানির দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স গুলশানে যা হবে যাত্রাবাড়ীতেও কেন তাই হবে? এক্ষেত্রে আমরা কেন ভর্তুকি দেব? অভিজাত এলাকায় পানি গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে বস্তি সহ যেসব এলাকায় দরিদ্র মানুষ বাস করে সেসব এলাকায় কম মূল্যে তার দেয়াল কথা ভাবা উচিত। শুধু আমাদের দেশে নয় উন্নত অনেক দেশও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের জন্যও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভর্তুকি হচ্ছে যে কোন সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।