সকল মেনু

আত্মহত্যার আগে কখন কোথায় ছিলেন ফারদিন, জানাল র‍্যাব

হটনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর ডেমরার সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশের (২৪) মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা করেন বাবা কাজী নুর উদ্দিন। ঘটনাটি ব্যাপক চ্যাঞ্চলের সৃষ্টি করে। র‍্যাব ফারদিনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ফারদিন ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টায় ডেমরার নিজ বাসা থেকে বুয়েটের উদ্দেশে বের হন। বিকেল প্রায় ৫টার দিকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে পরিচিত একজনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এরপর নীলক্ষেত-ধানমন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। পরে সাত মসজিদ রোডে রেস্টুরেন্টে খাবার খান এবং সেখান থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন রাত আনুমানিক ৮টায়। এরপর টিএসসিসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি শেষে রিকশাযোগে রামপুরায় যান আনুমানিক রাত পৌনে ১০টায়। এরপর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করেন তিনি।

প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের তথ্য তুলে ধরে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সেখান থেকে ফারদিন কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় যান।

তিনি বলেন, রাত ২টা ২৬ মিনিটে ফারদিন সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ছিলেন। রাত ২টা ৩৪ মিনিটে তিনি ব্রিজের প্রায় মাঝখানে যান।

রাত ২টা ৩৪ মিনিট ৯ সেকেন্ডে ফারদিন সেতুটির রেলিং ক্রস করে এবং ২টা ৩৪ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে ব্রিজ থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন। রাত ২টা ৩৪ মিনিট ২১ সেকেন্ডে শীতলক্ষ্যার পানিতে পড়েন তিনি। এরপর রাত ২টা ৩৫ মিনিট ৯ সেকেন্ডে তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয় এবং রাত ২টা ৫১ মিনিটে তার হাতঘড়ি পানিতে অকার্যকর হয়।

মঈন আরও বলেন, এ ঘটনায় ফারদিনের বাবার দায়ের করা মামলার তদন্ত হচ্ছে। তার মৃত্যু সংক্রান্ত অন্য কোনো সূত্র বা আলামত পেলে তদন্তে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।

এদিকে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ (২৪) হতাশা ও টাকার সংকটে পড়ে নদীতে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ফারদিন নূর পরশ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ৪ নভেম্বর রাতে তিনি নিখোঁজ হন। এর তিন দিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় তার বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন ফারদিনের বাবা কাজী নুরুদ্দিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top