সকল মেনু

দুই বোনের মুখে এসিড নিক্ষেপ, দুই ভাই-বোনের যাবজ্জীবন

হটনিউজ ডেস্ক:

দুই খালাতো বোনের মুখে এসিড নিক্ষেপের দায় প্রমাণিত হওয়ায় দুই ভাই-বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নারগিস আক্তার মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

দণ্ডিত দুই ভাই-বোন হলেন ফারজানা লতিফ সাকি (৩৫) ও ইফতেখার লফিত সাদি (৩৩)। এক যুগ আগে ২০১০ সালে চট্টগ্রামের চকবাজার থানার জয়নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একযুগ পর ঘোষিত রায়ে দুই ভাই-বোনকে কারাগারে যেতে হলো।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তসলিম উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সেই সঙ্গে আসামি সাকিকে ৫০ হাজার এবং সাদিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তিনি বলেন, ‘ঘটনর সময় ভিকটিম মুমতাহা কারিনার বয়স ছিল ১৯ বছর। তাঁর ছোট বোন সালনাবিল তাসনিমের বয়স ছিল ১৬ বছর। দণ্ডিত আসামি ও ঘটনার শিকার দুই বোন আপন খালাতো ভাই-বোন।

আদালত সূত্র জানায়, আসামিদের বাসা চট্টগ্রামের বাদুরতলা এলাকায়। তাঁরা ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর চকবাজার থানার জয়নগর এলাকায় খালার বাসায় বেড়ানে যান। ১০ অক্টোবর খালাতো বোন কারিনার বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছিল। সে জন্য আত্মীয়দের দাওয়াত দিতে কারিনার বাবা আনোয়ারুল কবির ও মা আনার কলি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে যান। ওই রাতে চার খালাতো ভাই-বোন একই বাসায় ছিলেন। রাতেই দুই বোনের মুখে এসিড ছুড়ে মারেন সাকি। পরে নিজের মুখেও এসিড মাখেন এবং অন্য কেউ ঘটনা ঘটিয়েছে এমনটা সাজানোর চেষ্টা করেন।

এ ঘটনায় সাকি ও সাদির বিরুদ্ধে মামলা করেন কারিনার বাবা আনোয়ারুল কবির। মামলার তদন্তপর্যায়ে পুলিশ দুই ভাই-বোনকে গ্রেপ্তার করে। পরে মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল এই মামলার বিচারকার্যক্রম শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষের ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী শম্ভু প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, ‘এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। ২২-২৩ বছরের একজন মেয়ে নিজের খালাতো বোনদের এসিড মেরে পরে নিজের মুখেও এসিড মাখবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। মামলা যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কেউই প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নয়। আশা করি, উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাব। ‘

কারিনার মা আনার কলি বলেন, ‘সাকির চেয়ে বয়সে ছোট আমার মেয়ে কারিনা। তার বিয়ে কেন আগে হচ্ছে, এ নিয়ে ঈর্ষান্বিত হয়েই আমার দুই মেয়েকে এসিডে ঝলসে দেয় সাকি। সাকির কথামতো এসিড জোগাড় করে দিয়েছিল সাদি। ‘

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top